রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৭, ০৯:০৯:৪২

‘ভাই আমাকে একটু ওঠার সুযোগ করে দেন’

‘ভাই আমাকে একটু ওঠার সুযোগ করে দেন’

ঢাকা : ইট কাঠের এই ব্যস্ত শহরে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আয়েশা খাতুন। পেশার কারণে প্রতিদিনই তাকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে দৈনিক বাংলা মোড়ের অফিসে যেতে হয়।

সেই মতোই সকাল ৯টা থেকে দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রাবাড়ী মোড়ে। এক, দুই মিনিট করে ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ভীড় ঠেলে বাসে ওঠা সম্ভব হয়নি আয়েশার পক্ষে। একের পর এক বাস আসছে। সবগুলোতেই বাদুড়ঝোলা মতো করে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রী।

স্বল্প সময়ের জন্য বাস থামতেই আয়েশা ছুটছেন তাতে উঠার জন্য। এক বাস মিস করে অন্য বাসে ওঠার প্রাণান্তকর চেষ্টা করেও পারছেন না। মানুষের প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে বাসে উঠতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি।

বাসের মুখে ভীড় করা অন্য যাত্রীদের উদ্দেশ্যে আয়েশার আকুতি, ‘ভাই আমাকে একটু ওঠার সুযোগ করে দেন’। একপর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে কাছের মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক কমিউনিটি পুলিশের সাহায্য চান আয়েশা।

তার কাছে আকুতি করে বলেন, ‘ভাই আমাকে একটু সুযোগ করে দেন। অফিস যেতে হবে। আপনি একটু বাসের হেলপারকে বলে আমাকে ওঠার সুযোগ করে দেন। আপনি বললে ওরা শুনবে।’

তবে আয়েশার এ অনুরোধ মন গলাতে পারেনি লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ওই কমিউনিটি পুলিশকে। আয়েশাকে উদ্দেশ্য করে তার সোজা-সাপ্টা জবাব, ‘আমার কিছুই করার নাই। আজ সব গাড়ি লোকাল। আর লোকাল গাড়িতে যে যেভাবে পারে পাড়াপাড়ি করে উঠবে।’

হয়ত আয়েশার মতো এমন অনেক তরুণীই সময় মতো যেতে পারেন কমস্থলে। সময় মতো ফিরতে পারেন না বাড়িতে। আর আমরাও ছুটে চলেছি সময়ের সাথে, আর ছুটতে ছুটতে হয়ত ভূলেই যায় পাশে দাঁড়ানো ওই মেয়েদের কথা যাদের পক্ষে কিছু কিছু সময় সত্যি বড় কঠিন হয়। আর সেই পরিস্থিতির জন্য দায়ী আমরাও! কারণ আমরা সুযোগ দিতে জানি না। সুযোগ নিতে জানি! কিন্তু তারপরও বিবেকের কাছে একটাই প্রশ্ন : এভাবে আর কতদিন?
১৬ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে