ঢাকা : রাজধানীর কাফরুলের ইব্রাহিমপুর বাজার এলাকায় দুই শিশু সন্তানের সামনে এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে গলাকেটে হত্যা করেছে ভাগিনা আহমেদ শরীফ শাকিল (৩০)। নিহতের ওই মামীর নাম রোজিনা আক্তার মিতু (৩০)।
গত পরশু মঙ্গলবার কাফরুল থানার ইব্রাহীমপুর এলাকার ৮৩৯ নম্বর বাড়ির নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যপারে নিহত রোজিনার বড় ভাই ফিরোজ আলম ভূঁইয়া বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিদেশ থেকে মামা রফিকুল আলম চৌধুরী মাঝে মধ্যে টাকা পাঠাতেন ভাগিনার অ্যাকাউন্টে। সেই পাঠানো টাকার দ্বন্দ্বের জেরে দুই শিশু সন্তানের সামনেই মামীকে গলাকেটে হত্যা করেন ভাগিনা শাকিল। খুনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত রোজিনার বড় মেয়ে মিনহা আলম পহেলার (৭) ভাষ্য অনুযায়ী শাকিল খুন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
রোজিনার ভাই ফিরোজ বলেন, শাকিল ভাগিনা হওয়ায় রোজিনার স্বামীর মাঝেমধ্যে তার কাছে টাকা পাঠাতো। শাকিলের মাঝে-মধ্যে এ বাসায় আসতো। নিয়মিত যাতায়াত ছিলো কিনা জানি না। রোজিনার স্বামীর পাঠানো টাকা অনেকবারই আত্মসাৎ করেছে শাকিল। এ নিয়ে কিছুদিন ধরে রোজিনা ও শাকিলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিলো। সেই দ্বন্দ্বের জেরেই শাকিল রোজিনাকে হত্যা করতে পারেন বলে জানান ফিরোজ।
এদিকে হত্যার খবর শুনে রফিকুল আলম চৌধুরীর (রোজিনার স্বামী) বড়ভাই মফিজুল আলম চৌধুরীর স্ত্রী নাজমা প্রথম ঘটনাস্থলে যান। নাজমা বলেন, আমি গিয়ে বাসার বাথরুমে রোজিনার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। মেয়ে দুইটা আমাকে মা বলেই ডাকে। ছোট মেয়েটাতো কিছু বোঝে না। কিন্তু বড় মেয়েটা বলে, ‘মা আম্মুর কী হয়েছে?’ এতো সুন্দর দুইটা শিশুকে আমি কী জবাব দেব?
তিনি আরও বলেন, সম্পর্কে জা হলেও আমি কখনো রোজিনার বাসায় আসিনি। শাকিল রোজিনার বাসায় যাতায়াত করতো কি না জানি না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাফিজ আহমেদ বলেন, ‘বড় মেয়ের বর্ণনা থেকে জানা যায়, সকালে দরজায় কেউ নক করে। পরে বড় মেয়ে দরজা খুলে দিলে শাকিল ঘরে প্রবেশ করে রান্না ঘর থেকে ছুরি আনে। তারপর রোজিনাকে টেনে বাথরুমে নিয়ে যায়। সেখানে দুই সন্তানের সামনেই রোজিনাকে হত্যা করে পালিয়ে যায় শাকিল। পরে মেয়েদের চিৎকারে পাশের প্রতিবেশীরা এসে পুলিশে খবর দেন। খবর শুনে পুলিশ বাথরুম থেকে রোজিনার মরদেহ উদ্ধার করে।’
২০ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস