ঢাকা : হেফাজতে ইসলাম কখনোই রাজনীতিতে জড়াবে না উল্লেখ করে সংগঠনটির আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, ‘হেফাজত কখনোই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াবে না। ভোটের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাউকে সমর্থনও জোগাবে না। ইসলামবিদ্বেষী অপশক্তি নতুন করে উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে নেমেছে।’
শনিবার বিকালে সংবাদপত্রে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতের আমির এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি বিশেষ ও রাজনৈতিক দল ঈমান-আকিদা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজ গঠন এবং দেশের স্বার্থে কাজ করবে, তারা পরোক্ষভাবে হেফাজতের আন্দোলনের কারণে উপকৃত হবে। তবে হেফাজত কখনোই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াবে না। ভোটের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাউকে সমর্থনও জোগাবে না।’
বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম প্রসঙ্গে শাহ আহমদ শফী বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেফাজতে ইসলাম অংশ নেবে এবং হেফাজত নির্বাচন কমিশনে নাম নিবন্ধনের আবেদন করছে— কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা। দাওরায়ে হাদীসের সনদকে সরকারিভাবে মান দেওয়ার পর থেকে ইসলামবিদ্বেষী অপশক্তি নতুনভাবে উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে নেমেছে। বাম সেকুলারপন্থীদের ইসলামবিদ্বেষ ও ভণ্ডামির মুখোশ দিন দিন উন্মুক্ত হয়ে পড়ায় আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে তাদের আক্রোশ বেড়ে গিয়েছে।’
হেফাজতের আমির বলেন, ‘হেফাজতের কোনও কার্যক্রমে গোপনীয়তা নেই। আমাদের সব কার্যক্রম স্পষ্ট ও প্রকাশ্য। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যেমন আমাদের বিশেষ কোনও সখ্য নেই, তেমনি শত্রুতাও নেই। ঈমান-আকিদা ও ধর্মীয় বিষয় এবং জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে আমরা যে কারও সঙ্গে কথা বলার অধিকার রাখি। এতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খোঁজার কোনও সুযোগ নেই।’
আহমদ শফী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা বার বার স্পষ্ট করে বলে আসছি, হেফাজত সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, ধর্মীয় ও আদর্শিক একটি সংগঠন। এরপরও কিছু মিডিয়ায় হেফাজতকে রাজনৈতিক রূপদানের প্রয়াস বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। এসব খবরে হেফাজতের যেসব নেতার নাম উদ্ধৃত করা হয়েছে, আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের বক্তব্যে পরিবর্তন এনে বিকৃত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস সনদকে মাস্টার্স সমমান ঘোষণা করায় বাম সেক্যুলারপন্থী গোষ্ঠী ও ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়ার গায়ে জ্বালা ধরে গেছে। তারা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে হাস্যকর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হাজির করে সিলেবাস নিয়ে অমূলক প্রশ্ন তুলছে। কওমি মাদ্রাসায় প্রয়োজনীয় সাধারণ জ্ঞানের পাশাপাশি উচ্চতর আরবি ভাষাজ্ঞান ও পবিত্র কুরআন-হাদীসের সর্বোচ্চ স্তরের মৌলিক শিক্ষা দেওয়া হয়।’
হেফাজতের আমির বলেন, ‘কুরআন-হাদীস ও ইসলামী জ্ঞানে পাণ্ডিত্য রাখা একজন বিজ্ঞ আলেম ছাড়া এই শিক্ষার মান নিয়ে বাইরের কারও মূল্যায়ন ও পর্যালোচনা কখনোই যথার্থ হবে না; যেমন মেডিক্যাল শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে একজন প্রকৌশলী বা আলেমের পর্যালোচনা যথার্থ হওয়ার কথা নয়। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় কখনও শিক্ষার্থীদের অন্যের গোলামি করার বা শ্রমের বাজারে সস্তা শ্রমিক হিসেবে নিজেকে বিক্রি করার শিক্ষা দেওয়া হয় না।’
২৯ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস