ঢাকা: রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সাফাত আহমেদ রিমান্ডের প্রথম দিনেই গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রায় এক ডজন বান্ধবীর নাম ফাঁস করেছেন।
এসব বান্ধবীর সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্কের কথাও খোলামেলা স্বীকার করেছেন তিনি। বান্ধবীদের মধ্যে উঠতি কয়েকজন মডেলও রয়েছেন।
সাফাতের বাবা তাকে দিনে কত টাকা হাত খরচ দেন? সাফাত গোয়েন্দাদের বলেছেন, প্রতিদিন তার হাতখরচ ছিল ২ লাখ টাকা। আর এ টাকার জোগান দিতেন তার বাবা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ।
তিনি বলেছেন, প্রতি রাতেই তারা এ ধরনের পার্টি করতেন। পাঁচ তারকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এসব পার্টিতে বন্ধু-বান্ধবীরা হাজির থাকতেন। এসব পার্টিতে বান্ধবীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের বর্ণনা করে সাফাত গোয়েন্দাদের বলেছেন, সবকিছুই সমঝোতার ভিত্তিতে হয়েছে।
বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি স্বীকার করে সাফাত দাবি করেছেন, ‘এটিও জোর করে হয়নি। ’ এর সপক্ষে গ্রেফতারকৃত সাফাত আহমেদ কিছু প্রমাণও দেখিয়েছেন গোয়েন্দাদের। এর মধ্যে সাফাত আহমেদ অভিযোগকারী দুই তরুণীর মধ্যে একজনের সঙ্গে ঘটনার রাতে তোলা ঘনিষ্ঠ কিছু ছবিও (সেলফি) দেখান গোয়েন্দাদের।
এদিকে শনিবার সকালে ঘটনাস্থল বনানীর দি রেইনট্রি হোটেল পরিদর্শন করেছে ওই ঘটনায় গঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবস্থানকালে তদন্ত কমিটির সদস্যরা হোটেলটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে তদন্ত কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় হোটেলটিতে মানবাধিকার লংঘন হয়েছে। ’ প্রায় একই সময়ে বনানীর ‘কে’ ব্লকে ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি নামের হোটেলটিতে তল্লাশি চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি দল। তবে তল্লাশি শেষে হোটেলটিতে অ্যালকোহলজাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন নারকোটিকস গুলশান জোনের পরিদর্শক ওয়াবদুল কবির।
অন্যদিকে হোটেলটির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ ‘রহস্যজনক’ কারণে অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়েছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। শনিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পৃথক অনুসন্ধান শেষ হলে হোটেল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেন।
এ সময় হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ও ইন্টার্নাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ ফারজান আরা রিমি সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার রাতে সাফাত আহমেদ ফ্রন্ট ডেস্কে অস্ত্র জমা দিয়েই তার বন্ধুদের নিয়ে হোটেলটিতে প্রবেশ করেছিলেন।
এর ফলে নির্যাতনের শিকার দুই তরুণী ‘অস্ত্রের মুখে নির্যাতনের যে অভিযোগ তুলেছেন, তা মিথ্যা ও অবান্তর’ বলে দাবি করেন ফারজান আরা রিমি। প্রেস ব্রিফিংকালে হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ফ্র্যাংক ফরগেটও উপস্থিত ছিলেন।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এম.জে