নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তুলে ধরেছে আবাসিক হোটেল রেইন ট্রি কর্তৃপক্ষ।
বেশিরভাগ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি তারা। অনেক ক্ষেত্রে তালগোল পাকিয়ে নিজেদের দ্বিচারিতার প্রকাশ ঘটিয়েছে।
তবে নির্যাতনের ঘটনায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারও দাবি করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে হোটেলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ঝালকাঠির সরকার দলীয় সংসদ সদস্য বিএইচ হারুনের বড় ছেলে আদনান হারুন।
এ সময় নিজেদের সাফাই গেয়ে নির্যাতনের সঙ্গে কোনোভাবেই হোটেল কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে দাবি করেন ম্যানেজার রাজা গোলাম মোস্তফা।
তবে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এমডি আদনান হারুন অনেকটাই তালগোল পাকিয়ে ফেলেন।
তিনি সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্নেরই সদুত্তর দিতে পারেননি।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, আপনাদের (হোটেল কর্তৃপক্ষ) বরাতে ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগীরা হাসতে হাসতে বের হয়ে গেছেন এমন তথ্য জানানো হয়। তবে এটা কতটুকু সত্য?
এর জবাবে হোটেলটির এমডি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ বিষয়ে তিনি জানেন না।
নির্যাতিতদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আশপাশের রুমের লোকজন কিছু শুনতে পায়নি দাবি করে হোটেল কর্তৃপক্ষ, পরবর্তীতে আবার বলা হয় সকল কক্ষ সাউন্ডপ্রুফ- এমন দ্বিচারিক কথার মানে কি?
এরও সদুত্তর দিতে পারেননি আদনান হারুন।
সর্বোপরি রেইন ট্রির মতো বিশ্বমানের দাবিদার একটি হোটেলে এমন একটা ঘটনা তাদের ব্যর্থতা কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আদনান হারুন বলেন, 'এটা অনগোয়িং ইনভেস্টিগেশন। এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না।'
এ সময় সাংবাদিকরা কিছু না বললে কেন সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন এমন প্রশ্ন তুললে সংবাদ সম্মেলন ছেড়ে চলে যান আদনান হারুন।
তবে সংবাদ সম্মেলনে আদনান হারুন দাবি করেন, ‘গত ১৩ মে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর হোটেলে তল্লাশি করে কিছুই পায়নি। কিন্তু পরের দিন ১৪ মে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ অভিযান চালিয়ে ১০ বোতল মদ পেয়েছে। তারা হোটেলে কীভাবে মদ পেলো? এখন সেটা আমাদেরও প্রশ্ন, আপনাদের বিবেকের কাছে।’
তাহলে শুল্ক গোয়েন্দা আপনাদের ফাঁসানোর জন্য সঙ্গে করে মদ নিয়ে এসেছিল কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আদনান হারুন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ফ্রাঙ্ক ফরগেট ঘটনার দিন রাতে সস্ত্রীক হোটেলেই অবস্থান করছিলেন। ওই রাতে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনি হোটেল কার্যক্রমে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখিননি বলে জানিয়েছেন।’
অন্যদিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হোটেলের পরিচালক মাহিন হারুন এবং মামলার প্রধান আসামি সাফাতের বন্ধুত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, 'আসামি সাফাত একদিনই এ হোটেলে এসেছিলেন এবং রাতযাপন করেছিলেন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মাহিন হারুন কেক নিয়ে গেছে বলে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তা ভুল।'
তিনি দাবি করেন, 'জন্মদিনের পার্টিতে হোটেল কর্তৃপক্ষই কমপ্লিমেন্টারি কেক সরবরাহ করে। এতে মাহিন হারুনের ব্যক্তিগত কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।'
এ সময় হোটেলটির ম্যানেজার ফ্রাঙ্ক ফরগেট ও ইন্টারনাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ ফারজান আরা রিমি উপস্থিত ছিলেন।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস