শুক্রবার, ১৯ মে, ২০১৭, ১০:১৪:১০

আফ্রিকার চিকুনগুনিয়া জ্বর ঢুকে পড়েছে ঢাকায়, জেনে নিন এই জ্বর সম্পর্কে

আফ্রিকার চিকুনগুনিয়া জ্বর ঢুকে পড়েছে ঢাকায়, জেনে নিন এই জ্বর সম্পর্কে

নিউজ ডেস্ক: ডেঙ্গু জ্বরের কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি। চিকুনগুনিয়া জ্বর অনেকটা তার মতোই। নতুন এই রোগ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, কারণ আফ্রিকার এই জ্বর ইতিমধ্যে ঢাকায় ঢুকে পড়েছে। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআর গত বছর এই রোগের উপর একটি সমীক্ষা চালায়। এতে ঢাকার সূত্রাপুর, ধানমণ্ডি, মতিঝিল ও মহাখালী এলাকার প্রতি ১০ বাড়িতে একজন করে (বয়স ১৫ থেকে ৬০ বছর) মোট ৬০১ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে। এঁদের মধ্যে ২০৭ জনই চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত বলে পরীক্ষায় জানা যায়। সে হিসেবে ঢাকার প্রায় ৩৩ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত বলে জানায় আইইডিসিআর। চলতি বছরের মে মাসে সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারি এই সংস্থাটি।

 মশাবাহিত রোগ
আইইডিসিআর-এর মতে, এডিস অ্যালবোপিকটাস' ও এডিস এজিপটি' নামক মশার কামড়ে চিকুনগুনিয়া জ্বর হয়ে থাকে। তবে কেবল নারী এডিস মশার কামড়েই এ রোগ হতে পারে। কামড় খাওয়ার পাঁচ দিন পর থেকে শরীরে লক্ষণগুলো ফুটে ওঠে। রোগের লক্ষণ হিসেবে মাথাব্যথা, সর্দি, বমি বমি ভাব, হাত ও পায়ের গিঁটে এবং আঙুলের গিঁটে ব্যথা, ফোসকা পড়া ও শরীর বেঁকে যেতে পারে। জ্বর উঠতে পারে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত। থাকতে পারে ২ থেকে ১২ দিন। তবে সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত জ্বর থাকে। অনেকে চিকুনগুনিয়া জ্বরকে ডেঙ্গু জ্বর মনে করতে পারেন। কারণ এদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। তবে ডেঙ্গুর সঙ্গে চিকুনগুনিয়ার মূল পার্থক্য হলো, এই জ্বরে হাড়ের জোড়াগুলো ফুলে যায়, ডেঙ্গু জ্বরে যেটা হয় না।

চিকিৎসা
ঢাকার একটি দৈনিক আইইডিসিআর এর সমীক্ষা প্রকাশ নিয়ে ২রা মে একটি প্রতিবেদন ছাপে। সেখানে চিকুনগুনিয়া রোগের চিকিৎসা বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদের মন্তব্য ছাপা হয়। তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বিদ্যমান আইসিটি, এলাইজা ও আরটি-পিসিআর প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। এক্ষেত্রে কেবল আলাদা কিছু কিটস প্রয়োজন, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইইডিসিআরে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, রক্ত পরীক্ষা করলেই রোগটি শনাক্ত করা যায়। এখন পর্যন্ত চিকুনগুনিয়ার কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। তাই চিকুনগুনিয়া সারাতে সাধারণ জ্বরের চিকিত্সা নিলেই চলবে। বিশ্রাম, প্রচুর তরল খাবার ও প্যারাসিটামল সেবন করা যেতে পারে। তবে চিকুনগুনিয়া জ্বর প্রতিরোধে এডিস মশার প্রজনন বন্ধ করতে হবে।

ইতিহাস
১৯৫২-৫৩ সালে আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ায় প্রথম এই রোগের আবির্ভাব ঘটে। আইইডিসিআর-এর সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রথম এ রোগে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং ঢাকার দোহার ও কেরানীগঞ্জে। পরে ২০১১ সালের নভেম্বরে নতুন করে পাবনার সাঁথিয়ায় আবারও চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। আর ঢাকায় প্রথম দেখা দেয় গত বছরের আগস্টে।-ডয়েচে ভেলে
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে