ঢাকা : বহুল আলোচিত বনানী সম্ভ্রমহানীর মামলার আসামি নাঈম আশরাফ গোয়েন্দাদের জেরার মুখে সমাজের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম বলেছেন, যাদেরকে তিনি উচ্চ মূল্যে (প্রচার অযোগ্য শব্দ) দিয়ে থাকতেন। এই কাজ করে তিনি এখন ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মালিক।
ভোগ-বিলাসের জীবনে আকৃষ্ট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া থেকে অভিজাত এলাকার মধ্যবিত্ত পরিবারের সুন্দরী মেয়েদের নাঈম আশরাফ সহজে পটাতেন। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নামে নাঈম আশরাফ ব্যবসা করলেও তার আসল ব্যবসা ছিল অনৈতিক কর্মকান্ড।
এই মুহুর্তে তার ব্যাংক একাউন্টেও ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা জমা আছে। গোয়েন্দাদের জেরার মুখে তিনি এ টাকা সুনির্দিষ্ট উৎস বলতে পারেননি। গোটা অন্ধকার জগতের যে চিত্র বনানীর রেইনট্রি হোটেলের সম্ভ্রমহানীর মামলা ঘিরে উঠে আসছে তাতে গোয়েন্দারা তাজ্জব হয়ে যাচ্ছেন।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্র বলছে, উপর মহলে পুরো রিপোর্ট তারা দিতে যাচ্ছেন। সব মহলে প্রশ্ন উঠছে কারা সেই প্রভাবশালী যাদের নাঈম আশরাফ নিয়মিত সেবা দিতেন? যেসব মেয়েরা নাঈমের হাত হয়ে বিত্তবান ও ক্ষমতাবানদের মনোরঞ্জনে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন এতদিন তারাও এখন আতংকে রয়েছেন। যেকোনো মুহুর্তে গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পারে।
এদিকে, সাত দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে নাঈমকে আদালতে নেওয়া হয়। এরপর তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক ইসমত আরা এমি। নাঈম আশরাফ দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের খাস কামরায় সে এই জবানবন্দি দেয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
গত সাতদিন নাঈম আশরাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার। তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মামলার বাদীর বান্ধবীকে সম্ভ্রমহানীর দায় স্বীকার করেছে নাঈম।
উল্লেখ্য, সম্ভ্রমহানীর শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন দুই তরুণী। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ তার জন্মদিনের দাওয়াত দেয় এই দুই তরুণীকে। এরপর বনানীর রেইনট্রি নামের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের সম্ভ্রমহানী করে সাফাত ও নাঈম।
২৫ মে, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস