বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭, ০৬:১৩:৩০

মিরপুরের বেড়িবাঁধ থেকে এএসপি মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার

মিরপুরের বেড়িবাঁধ থেকে এএসপি মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর রূপনগর থানার মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে হাইওয়ে পুলিশের একজন সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম মিজানুর রহমান তালুকদার (৫০)। তিনি হাইওয়ে পুলিশের সাভার সার্কেলে কর্মরত ছিলেন।

বুধবার (২১ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুর-আশুলিয়া বেড়িবাঁধের বোটক্লাব এলাকার রাস্তার পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে রূপনগর থানা পুলিশ।

রূপনগর থানার ওসি সৈয়দ শহীদ আলম বলেন, ‘তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যার পর বেড়িবাঁধ এলাকায় তার লাশ ফেলে গেছে। আমরা সবগুলো বিষয় সামনে রেখে খতিয়ে দেখছি।’

পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে বেড়িবাঁধের বোটক্লাব এলাকায় রাস্তার পাশে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ তার লাশের সঙ্গে থাকা দু’টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার পরিচয় উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

এছাড়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, র‌্যাব, পিবিআইসহ সব গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।

রূপনগর থানার ওসি সৈয়দ শহীদ আলম জানান, নিহত মিজানুর রহমান তালুকদারের গলায় কাপড় দিয়ে পেঁচানো ছিল। তার শরীরে একটি চেক শার্ট ছিল। প্যান্টটি ছিল পুলিশের ইউনিফর্ম। সঙ্গে ব্যাগে তার ব্যক্তিগত গাড়ির চাবিও পাওয়া গেছে। পুলিশ কর্মকর্তা এখানে কিভাবে আসলেন বা কারা তাকে এখানে নিয়ে এসেছে তা জানার চেষ্টা চলছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিহত মিজানুর রহমান ভোর পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। তার নামে অফিসিয়াল কোনও গাড়ি ইস্যু করা ছিল না। একারণে তিনি ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার নিয়ে অফিসে যেতেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাইভেট কারটি তার বাড়ির গ্যারেজেই রয়েছে। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগের ভেতরে পুলিশের  ইউনিফর্মের শার্ট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি অফিসে গিয়ে ইউনিফর্মের শার্ট পড়েন। কিন্তু গাড়ি ছাড়া তিনি কেন বের হলেন তার কোনও উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, মিজানুর রহমানের লাশ পাওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যদের জানানো হলেও তার স্ত্রী বা সন্তানের কেউ ঘটনাস্থলে আসেননি। এই বিষয়টি সন্দেহজনক। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার কোনও ঝামেলা ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত মিজানুর রহমান তালুকদারের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এলাকার আলিভুখা গ্রামে। ঢাকার উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের ৩৮ নম্বর বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন তিনি। ১৯৮৯ সালে উপ-পরিদর্শক হিসেবে পুলিশে যোগদান করা মিজানুর রহমান বছর তিনেক আগে এএসপি হিসেবে পদোন্নতি পান। এর আগে তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দুই সন্তানের জনক তিনি। তার বড় মেয়ে সুমাইয়া উত্তরার একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছে। আর ছোট ছেলে মুশফিক প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

নিহত মিজানুর রহমানের ভাগ্নে শামীম শেখ বলেন, ‘তারা বুঝতে পারছেন না কে বা কারা তার খালুকে হত্যা করেছে। তার খালুর সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল কিনা তা তারা বলতে পারছেন না।
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে