ঢাকা : শর্ত পূরণ করায় চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন মাদরাসা থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা। এর আগে মাধ্যমিক (দাখিল) ও উচ্চ মাধ্যমিকে (আলিম) ২০০ নম্বর করে বাংলা ও ইংরেজি না পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সারির বেশ কয়েকটি বিষয় পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘২০০ নম্বরের শর্ত পূরণ করায় মাদরাসার শিক্ষার্থীরা চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে সব বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।’
দীর্ঘদিন ধরে বাংলা এবং ইংরেজিতে ২০০ নম্বর না পড়ায় জ্ঞান অর্জনের দিকেও স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের থেকে অপেক্ষাকৃতভাবে পিছিয়ে পড়তে হয় মাদরাসা শিক্ষার্থীদের। তাই বিষয়টি আমলে নিয়ে ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম দাখিল ও আলিমে ২০০ নম্বরের বাংলা এবং ইংরেজি মাদরাসার সিলেবাসভুক্ত করে মাদরাসা বোর্ড।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে দাখিল এবং ২০১৭ সালে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা ২০০ নম্বর করে বাংলা এবং ইংরেজি পড়ে আসেন। তাই সর্বপ্রথম ব্যাচ হিসেবে এরাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ শর্ত পূরণ করতে পেরেছেন।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজি, ভাষা বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অর্থনীতি, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, পপুলেশন সায়েন্স, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন, ক্রিমিনোলজি, কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন্স স্টাডিজ, ইংলিশ ফর স্টিকারস অ্যান্ড আদার্স ল্যাঙ্গুয়েজ, ফ্রান্স ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার, চায়নিজ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার এবং জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার এসব বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে কোনো বাধা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বহুদিন ধরে একটা অপপ্রচার চলে আসছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদরাসার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় না। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই ভর্তি হতে পারে। তবে যারা শর্ত পূরণ করবে তারাই কেবল কয়েকটি বিষয়ে ভর্তি হতে পারত। এটা একটা ইউনিভার্সেল সিস্টেম। এখানে যারা নিয়মনীতি পূরণ করবে তারাই সব বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে। তাই মাদরাসার ছাত্ররা এবার থেকে সব শর্ত পূরণ করায় সব বিষয়ে ভর্তি হতে পারবে।
আগামীকাল ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি (২০১৭-১৮) বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। এ বছর পাঁচটি ইউনিটে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ৩৯। ৭ হাজার ১২৩টি আসনের বিপরীতে তারা এ ভর্তি যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। প্রতিটি আসনের বিপরীতে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ক-ইউনিটে ১ হাজার ৭৬৫টি আসনের জন্য ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা ৮৯ হাজার ৪৮৭।
কলা অনুষদভুক্ত খ-ইউনিটে ২ হাজার ৩৬৩টি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৩২ হাজার ৭৩৬। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১ হাজার ২৫০টি আসনের বিপরীতে অংশ নেবে ২৯ হাজার ৩১১। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ-ইউনিটে ১ হাজার ৬১০টি আসনে জন্য ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৯৮ হাজার ৩৩। চারুকলা অনুষদভুক্ত চ ইউনিটে ১৩৫টি আসনের বিপরীতে ১৩ হাজার ৪৭২ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
পরীক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার সিট-প্ল্যানসহ যাবতীয় তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের admission.eis.du.ac.bd ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারবে। পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, মোবাইল ফোনসহ টেলিযোগাযোগ করা যায়- এ ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভর্তি পরীক্ষায় কোনো জালিয়াতি, অসদুপায় ও অনিয়ম ঠেকাতে বরাবরের মতো এবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। -জাগো নিউজ
এমটিনিউজ/এসএস