রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭, ০৩:৩৯:২১

৫ কারণে মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে গেলেন ঐশী

 ৫ কারণে মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে গেলেন ঐশী

নিউজ ডেস্ক :  পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রকাশ হয়েছে।

রবিবার (২২ অক্টোবর) রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের স্বাক্ষরের পর ৭৮ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।

এর আগে গত ৫ জুন আলোচিত এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামির আপিল শুনানি করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ঐশী রহমানের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

হাইকোর্ট বলেছেন, ঐশীর অপরাধ মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য হলেও তার বয়স ও মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সাজা কমানোর এই রায় দেওয়া হয়েছে।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে দণ্ড কমানোর ব্যাখ্যায় আদালত বলেন, পাঁচটি কারণে ঐশীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়েছে।  এগুলো হলো :

১. হত্যাকাণ্ডের সময় ঐশী মাদকাসক্ত ছিলেন এবং ১৪ বছর বয়স থেকেই তিনি সিসা, ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলের মতো নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করতেন।

২. ঐশী বংশগতভাবে মানসিক রোগী।  তাঁর চাচা-দাদি-খালা অনেকের মধ্যেই মানসিক রোগের লক্ষণ আছে, যা তাঁর মধ্যেও ছোটবেলা থেকে বিদ্যমান।

৩. হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দ্বিতীয় দিনের মাথায় ঐশী আত্মসমর্পণ করেছেন।  এতে বোঝা যায়, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

৪. ঘটনার সময় ঐশীর বয়স ছিল ১৯ বছর।  এ বয়সের একটি সন্তানকে তাঁর বাবা-মা যথাযথভাবে দেখভাল করেননি।  ফলে ঐশী ছোটবেলা থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন।

৫. ঐশীর বাবা-মা দুজনেই সন্তানের লালনপালন বিষয়ে উদাসীন ছিলেন।  এ কারণে ছোটবেলা থেকেই তিনি স্নেহবঞ্চিত হয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

এর আগে ২০১৫ সালে ঐশী রহমানকে দুবার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।  প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।  একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর অন্যটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে।  একই সঙ্গে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।  অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।  মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দেন আদালত।

ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।

২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে ঐশী রহমান রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  এ ঘটনায় পরের দিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।  একই দিন পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন ঐশী রহমান।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে