বিনোদন ডেস্ক : ‘রাতের খাবার একসঙ্গে খেয়েছি, রাত ১০টার দিকে বাসা থেকে বেড়িয়ে কাজে গেছি। সকালে খুনের খবরে ছুটে আসি। ভাবতে পারছি না জীবন্ত ভাই আমার কিভাবে খুন হলো? তার তো কোনো শত্রু ছিল না।’
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বাড্ডা থানার সামনে আহাজারি করছিলেন নিহত জামিলের বড় ভাই ইব্রাহিম ইবু ও শামীম হোসেন। বলছিলেন, ‘ও (জামিল) মাত্র কাজে যোগদান করেছে। ড্রাইভিং পেশার মানুষের কী এমন শত্রু থাকতে পারে?’
বুধবার দিনগত রাতের কোনো এক সময় খুন হন বাবা জামিল (৩৮) ও মেয়ের নুসরাত। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার ময়নারবাগের ৩০৬/পাঠান ভিলার ৩ তলার ছাদের ভাড়া বাসা থেকে তাদরে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বাড্ডা থানা পুলিশ জানায়, জামিলের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের করপাড়া ইউনিয়নের বনপাড়া গ্রামে। নিহত জামিলের বাবার নাম মৃত বেলায়েত শেখ। সম্প্রতি তিনি তেজগাঁওস্থ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়ীচালক হিসেবে যোগদান করেন।
জামিলে বড় ভাই ইব্রাহিম ইবু জানান, ‘রাতে ওর (জামিল) বাসায় গেছি। ভাই-ভাজিতি (নুসরাত) একসঙ্গে খেয়েছি। ভাইয়ের বউ (ভাবী) টিভি দেখছিল। জামিল আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা ধার চেয়েছিল। সেই টাকা দিতেই রাতে ওর বাসায় যাওয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকালে খুন হবার খবরে ওর বাসায় যাই। গিয়ে দেখি রক্তাক্ত ভাই, মাথায় কোপ ও পিটুনির স্পষ্ট দাগ। নুসরাতের শরীরে রক্ত নেই। তবে গলায় দাগ দেখেছি। পুলিশ লাশ নিয়ে গেছে। ঘর এলোমেলো। রাতে যে টাকা ধার নিয়েছিল সে টাকার আর হদিস মেলেনি। আলমারি খোলা।’
নিহত জামিলের আরেক বড় ভাই শামীম জানান, ‘আমি ও জামিল একই অফিসে চাকরি করি। আমি ওর বাসায় সন্ধ্যায় গেছিলাম। আমরা উত্তর বাড্ডার ময়নাবাগ এলাকায় পাঁচভাই থাকি। সে সুবাদে ওর বাসায় আমাদের যাতায়াত আছে। সন্ধ্যায় আমড়া কেটে দিয়েছিল ভাই বউ আরজিনা। গল্প করে নুসরাতকে নিচে নামিয়ে পটেটো কিনে দিয়ে আমি অফিসে চলে আসি। আজ সকালে খবর পাই ভাই আমার খুন হয়েছে।’
বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বাবাকে (জামিল) পিটিয়ে ও মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রী আরজিনা বেগমকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে, গত বুধবার দিনগত রাতে কাকরাইলে বাসায় ঢুকে মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। কেন, কারা বাসায় ঢুকে মা-ছেলেকে হত্যা করেছে প্রাথমিকভাবে পুলিশ তা নিশ্চিত হতে পারেনি।
বাসা থেকে কিছু খোয়া গেছে কিনা সে ধারণাও দিতে পারেনি। ঘটনার সময় বাসায় থাকা একজন কর্মী ও বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। কাকরাইলের ওই ঘটনার একদিন পরই বুধবার বাড্ডা এলাকার ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কি না -সে বিষয়েও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/এস