সোমবার, ০৬ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:৪৪:১৩

শিশু তাওসিফের বুদ্ধিতে হেরে গেল তিন অপহরণকারী, হল গ্রেফতার

শিশু তাওসিফের বুদ্ধিতে হেরে গেল তিন অপহরণকারী, হল গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক : শিশু তাওসিফকে গুলশানের পুলিশ প্লাজা শপিংমল থেকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে অপহরণ করা হয়েছিল। এরপর অপহরণকারীরা তাকে মধ্যে কুনিপাড়ার একটি বাসায় আটকে রেখে পরিবারের কাছে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দারা।

জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোমিন আহমেদ তার স্ত্রী নাজমুন আক্তার এবং শিশু তাওসিফুর রাহিমকে (৬) নিয়ে পুলিশ প্লাজায় কেনাকাটা করতে যান। এ সময় হঠাৎ করেই বাবা-মায়ের চোখের আড়াল হয়ে যায় তাওসিফ। বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর তাওসিফকে না পেয়ে শপিংমলের পুলিশকে জানান তারা। কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলশান থানা পুলিশ শপিংমলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারে এক যুবক শিশুটির সাথে কথা বলছে। এরপর গত শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ ও গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের গুলশান জোনাল টিম যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশুকে উদ্ধারসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলোÑ রুবেল রানা, শিপন শেখ ও সাগর।

পুলিশ জানায়, অপহরণকারীরা একটি সঙ্ঘবদ্ধচক্র। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের সাথে আর কারা জড়িত সেটাও খুঁজে বের করা হবে।

গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি শেখ নাজমুল আলম।

তিনি বলেন, অপহরণের পর শিশু তাওসিফকে অপহরণকারীরা মধ্য কুনিপাড়ায় একটি বাসায় আটকে রাখে। শিশুটি বাবার মোবাইল নম্বর মুখস্থ করে রেখেছিল। তার কাছ থেকেই নম্বর পেয়ে অপহরণকারীরা দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাইতে মোমিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করে। শিশুটির মেধা অপহরণকারীদের গ্রেফতারে সহায়তা করেছে।

পুলিশ কর্মকর্তা শেখ নাজমুল আলম বলেন, অপহরণকারীরা শনিবার ভোর ৪টায় র্যাংগস ফ্লাইওভারের নিচে মুক্তিপণের জন্য আসে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আগে থেকেই ছদ্মবেশে তেজগাঁও-বিজয় সরণি ক্রসিংয়ের আশপাশে অবস্থান নেন। তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে অপহরণকারীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গোয়েন্দারা এগিয়ে গেলে একটি প্রাইভেটকার থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলি করে পালিয়ে যেতে চায় অপহরণকারীরা। পুলিশ নিজেদের আত্মরক্ষার্থে পাঁচ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে অপহরণকারী দলের একজন গাড়ি থেকে নিচে পড়ে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল রানা জানায়, শিশু তাওসিফ হাতিলঝিল সংলগ্ন মধ্য কুনিপাড়ার একটি বাসায় আরো দুইজন অপহরণকারীর হেফাজতে রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা দল ওই বাড়িতে গিয়ে অপর দুই অপহরণকারীসহ তাওসিফকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। অপহরণকারী চক্রের অপর সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার গোলাম সাকলায়েন অল্পের জন্য গুলিবিদ্ধ না হলেও গুরুতর আহত হন বলেও জানান শেখ নাজমুল আলম। গতকাল পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে শিশু তাওসিফের বাবা মোহাম্মদ মোমিন আহমেদ সন্তানসহ উপস্থিত হয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে