নিউজ ডেস্ক : সদ্যপ্রয়াত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে পরবর্তী মেয়র নিয়ে জল্পনা-কল্পনা। রাজনৈতিক দলগুলোর ঘরোয়া আলোচনায় পরবর্তী মেয়র কে হবেন এনিয়ে হিসেব নিকেশ শুরু হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেছেন, ‘ ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনগত বাধ্য বাধকতা রয়েছে। আমারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের দিন তারিখ ঠিক করব।’ কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের দিন তারিখের অপেক্ষা করছে না। প্রধান দুই দলেই সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে আলাপ আলোচলা শুরু হয়ে গেছে। দুই দলই প্রয়াত আনিসুল হকের মতো একজন দক্ষ, পরিচিত মুখ খুঁজছে।
আনিসুল হকের মৃত্যুর আগেই মেয়র নিয়ে আওয়ামী লীগ চিন্তা ভাবনা শুরু করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবের হোসেন চৌধুরীকে ডেকে অনেক বিষয়ে কথা বলেন, এর মধ্যে ঢাকা উত্তরও ছিল। তবে আনিসুল হকের মৃত্যুর পর অনেকেই উত্তরের মেয়র হবার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। প্রয়াত মেয়রের ছেলেকেও অনেকে মেয়র হিসেবে চাইছেন। ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান দলের কর্মীদের কাছে তাঁর প্রার্থী হবার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। তবে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শুধু রাজনীতি করেন এমন ব্যক্তিকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিতে আগ্রহী নন বলেই জানা গেছে। তাছাড়া তিনি দল ও প্রশাসন পৃথক করার নীতি নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের মহানগরীর নেতা ও ব্যবসায়ী রহমতউল্লাহও উত্তরের মেয়র পদে আগ্রহী। মেয়র নির্বাচনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী ডা. এইচ বি এম ইকবাল। তবে এসব আগ্রহে উৎসাহ নেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কমিটির। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, আমরা জানি আনিসুল হকের মতো কাউকে আমরা পাব না, তবে তাঁর কাছাকাছি প্রার্থী খুঁজছি। যাঁরা সাবের হোসেন চৌধুরীকে পছন্দ করেন না, তাদেরই প্রার্থী খোঁজায় আগ্রহ বেশি। তাদের পছন্দ হামীম গ্রুপের চেয়ারম্যান, সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ। খুব শিগগিরই তাঁর সঙ্গে এনিয়ে কথা হবে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একজন নেতা। সাবের হোসেনকে ঠেকাতে ক্রীড়াঙ্গনে একটি গ্রুপ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের নামও বিবেচনা করছেন।
বিএনপিতেও মেয়র প্রার্থী নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। গত মেয়র নির্বাচনে বিএনপি নেতা আবদুল আওয়াল মিন্টো ছিলেন অটোমেটিক চয়েস। কিন্তু এবার মিন্টোর মনোনয়ন পাওয়াটা এত সহজ হবে না বলেই মনে করছেন বিএনপির অনেক নেতা। মিন্টোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে দলে প্রশ্ন আছে। বিএনপি কট্টরপন্থীরা নিষিদ্ধ ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মেয়র পদে প্রার্থী করতে উৎসাহী। এরা মনে করছে, মাহমুদুর রহমান প্রার্থী হলে, ঢাকায় আন্দোলন চাঙ্গা হবে। আবার সমঝোতাপন্থীরা সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল মাহাবুবুর রহমানের নাম নিয়েও কথা বলতে শুরু করেছেন। তবে, তারেক পন্থীরা মনে করছেন, মেয়র নির্বাচন হতে পারে সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণের প্রথম ধাপ। এজন্যই তাঁরা জোবায়দা রহমানের নাম প্রস্তাব করেছেন। এদের মতে তারেক জিয়ার স্ত্রী ডা. জোবায়দা প্রার্থী হলে দলে জাগরণ হবে। কে প্রার্থী হবে সেটা পরের বিষয় তবে আগামী বছরের শুরুটা ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী নিয়েই সরগরম থাকবে ঢাকার রাজনীতি।-বাংলা ইনসাইডার
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস