ঢাকা: বাবার অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখতে চান প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের ছেলে নাভিদুল হক। শনিবার সন্ধ্যায় বনানী কবরস্থানে বাবার দাফন শেষে নাভিদুল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি জানান, তার বাবা যে কাজ শুরু করেছিলেন, যে পরিকল্পনা করেছিলেন তা বাস্তবায়ন করতে যেকোনো ধরনের উদ্যোগ নিতে তাদের পরিবার ত্যাগ স্বীকার করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী চাইলে যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে তারা সব সময় প্রস্তুত।
মেয়র পুত্র বলেন, প্রত্যেকটা অ্যাকটিভিটি নিয়ে আগে-পরে বাবা আমার সঙ্গে কথা বলতেন। আমাকে ফোন দিতেন। শহর সম্পর্কে উনার যে প্ল্যানগুলো ছিল এগুলো জানার, বোঝার এবং উনাকে অ্যাডভাইস দেয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। অনেক কাজই উনি শুরু করে গেছেন এবং অনেক কাজের প্ল্যান উনি দিয়ে গেছেন। যেগুলো সম্পন্ন করলে আধুনিক ঢাকা গড়া সম্ভব।
এক প্রশ্নের জবাবে নাভিদুল হক বলেন, স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিজ হাতে নিতে চাই কিনা এটা কঠিন একটা প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী উনার জন্য, দেশের জন্য বা শহরের জন্য যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকারের কথা বললে আমরা সেটা করতে প্রস্তুত। কোনো পজিশন থেকে না, পজিশন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের ফ্যামিলি সেটা করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, উনি (আনিসুল হক) খুব ভালো এবং সাদা মনের একজন মানুষ ছিলেন। কোনো বিষয়কে জটিল করে দেখতেন না। সব সময় কোনো বিষয়কে সহজ ও সাধারণভাবে দেখতেন। সব কিছুর ভালোটা দেখতেন। খারাপটা নিয়ে কখনও চিন্তাও করতেন না। কোনো মানুষকে কখনও খারাপভাবে দেখতেন না। কাজের ক্ষেত্রে যদি কাউকে সমালোচনা করতেন সঙ্গে সঙ্গে তাকে আবার ভালো বলে শোধরে নিতেন। তারপরও দুই বছর/আড়াই বছর কাজ করেছেন। এই সময়ে অনেকের অনেক কিছু ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে। অথবা ব্যক্তিগতভাবে কাউকে যদি কষ্ট দিয়ে থাকেন। মনে রাখবেন উনি নিজের স্বার্থের জন্য কিছু করতেন না।
নাভিদুল বলেন, উনি ডিএনসিসি থেকে কখনো বেতন নেননি। ডিএনসিসি’র গাড়ি ব্যবহার করেননি। গাড়ির তেল পর্যন্ত নেননি। উনি সব সময় ডিএনসিসিকে দেশের জন্য কিছু করার এভিনিউ হিসেবে দেখেছেন এবং ব্যবহার করেছেন। এই কাজে যদি কারো ক্ষতি করে থাকেন তাহলে সেটা নিজের কোনো স্বার্থের জন্য না, তার কোনো বন্ধু, কোনো আত্মীয় বা তার কোনো ব্যবসার জন্য করেননি। উনি যা করেছেন শহরের জন্য করেছেন। শহরের মানুষের জন্য করেছেন।
এসময় তিনি বলেন, সারা দেশের থেকে অনেক মানুষ এসেছেন। তাকে একবার দেখতে চেয়েছেন। অনেকে হয়তো দেখতে পেরেছেন। অনেকে পারেননি। আমরাও ধারণা করিনি এতো লোক হবে। উনাকে শেষ বিদায় জানাতে এতো লোক আসবে। উনি হয়তো নিজেও কল্পনা করতে পারেননি এতো লোক তাকে ভালোবাসেন।
নাভিদুল বলেন, উনি সব সময় একটি কথা বলতেন। আমি যখন মেয়র থাকবো না। তখন কি মানুষ আমাকে মনে রাখবে। আমি এমন কিছু করতে চাই যেন মানুষ আমাকে মনে রাখে। উনাকে দেশের মানুষ, শহরবাসী যে ভালোবাসা দিয়েছেন এই স্মৃতি নিয়েই আমরা বেঁচে থাকবো। আজ অনেকে এসেছেন। অনেকের হয়তো কষ্ট হয়েছে। অনেকে হয়তো কাছে আসার সুযোগই পাননি। তার জন্য সবার কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস