নিউজ ডেস্ক: রাত ৩টা ১৬ মিনিট। সুনশান নীরবতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশেপাশে। তীব্র শীতে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হয় না। আর এমন গভীর রাতে পুরো রাজধানীতেই রাজ্যের নীরবতা। তবে ব্যক্তিগত কাজ শেষে পুরান ঢাকা থেকে ফিরছিলেন এই প্রতিবেদক। পথে পলাশী-নীলক্ষেত রোডে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে একাকী একজন মানুষকে কম্বল বিতরণ করতে দেখে আগ্রহ ভরে পরিচয় জিজ্ঞাসা করে জানা গেল- কম্বল বিতরণকারী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।
একটি বড় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের একাকী কম্বল বিতরণের এমন দৃশ্য অনেকটা অবাক হওয়ার মতো হলেও সত্য। পরিচয় পর্ব শেষে কথা হয় এস এম জাকির হোসাইনের সঙ্গে।
তিনি বলেন, কিছু বড় ভাইদের সহযোগিতায় কম্বলগুলো সংগ্রহ করেছি। চেষ্টা করেছি ছিন্নমূল মানুষের পাশে দাঁড়াতে। যাতে এই তীব্র শীতের মাঝে একজন মানুষ অন্তত একটু ভালো থাকতে পারে।
দেশের বৃহৎ একটি সংগঠনের নেতা হওয়ার পরও গভীর রাতে একাকী কম্বল বিতরণের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব সামান্য একটি বিষয়। যার যার সাধ্যমতো এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। আর এই নৈতিক দায়িত্বটা সবাইকে জানিয়ে পালন করার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। তাই গভীর রাতে মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছি।
আর্ত মানবতার সেবায় এমন ছোট্ট কাজগুলো গণমাধ্যমে আসার ক্ষেত্রে অনিহা জানিয়ে তিনি বলেন, থাক না এসব। কিছু কাজ সবার অন্তরালে করাটার মাঝেই আনন্দ। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন, আমি নিজেকে সেই মিছিলের একজন কর্মী মনে করেই গর্ব অনুভব করি।
তীব্র শীতে জবুথবু বৃদ্ধ ইউনূস মিয়া। দুপা না থাকা এ মানুষটি শুয়ে ছিলেন রাস্তার পাশে। গায়ে কেবল পাতলা একটি চাদর। ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে জাকির তার হাতে তুলে দেন কম্বল। অসীম কৃতজ্ঞতায় ইউনূসের চোখে দেখা গেল আনন্দাশ্রু।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের শীতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি। ভিক্ষার টাকা জমিয়ে একটি কম্বল কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু টাকার জোগার না হওয়ায় তার আর কেনা হয়নি। তাই এই চাদরটি পেচিয়েই ঘুমিয়েছি। কিন্তু এই মানুষটির দেয়া কম্বল আমাকে শীতের হাত থেকে বাচিয়ে দিল।
এমন আনন্দাশ্রু দেখা গেছে জুহিতন বিবি, কেফাতুল্লা, সলেমান মোল্লাসহ অনেকের চোখেই।-জাগো নিউজ
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস