ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবরুদ্ধ উপাচার্য অধ্যাপক আকতারুজ্জামানকে উদ্ধার করার ঘটনায় ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছে। শায়লা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে কেবিন ব্লকের ৬০৬ নম্বর রুমে চিকিৎসক ডা. এসএম শারাফাতের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সুস্থ হতে আরও ২/৩ দিন সময় লাগবে।
শ্রাবণী শায়লার সহকর্মীরা বলছেন, শায়লার আগে থেকেই অ্যাপেন্ডিক্সের অপারেশন ছিলো। অপারেশন স্থলে লাথি লাগায় বার বার বমি হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব নন্দী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন:
‘শায়লাকে নিয়ে লিখছেন অনেকেই। ওকে নিয়ে লেখার আগে ঘুরে আসুন বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ৬০৬ নম্বর কেবিন। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। ডাক্তারের রিপোর্ট দেখুন। দয়া করে তারপর লিখুন। অমানবিক হওয়া ভাল, তবে এতোটা নয়। বিস্তারিত না লিখে শুধু এটুকুই বলছি, দয়া করে ৬০৬ নম্বর কেবিনে যান, কথা বলুন, এরপর লিখুন।’
প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও একদল ছাত্রদের আন্দোলন করে প্রায় চার ঘণ্টা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে ঘেরাওকারীদের মারধর করে উপাচার্যকে ‘উদ্ধার’ করেন। এতে দুই পক্ষের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটানায় শায়লার পেটে লাথি লাগার কারণে বমি হচ্ছে। এছাড়া তিনি হাতেও আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আহত শায়লাকে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। শায়লার অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি চৈতালী হালদার চৈতী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বলছি আমাদের বোন শ্রাবণী শায়লার কথা…যাকে নিয়ে নানা কুপ্রচারে নেমেছেন ষড়যন্ত্রকারীরা। একদিনে ২০ টা ফেক আইডি খুলে জাতির কাছে ক্ষমাও চাইয়ে ফেলেছেন অলরেডি। আত্মরক্ষা করাটা যদি অপরাধ হয় তবে আমার বোন সেটি করেছে…
ওর পেটে যে ভয়াবহ রকম আঘাত লেগেছে এবং তাতে ও মারাত্মক ভাবে আহত তার চাক্ষুষ সাক্ষী আমি নিজে..। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল থেকে ওকে যখন বেটার ট্রিটমেন্টের জন্য ডিএমসি তে নিয়ে যাই তখন ওর চিৎকার আমি সইতে পারছিলাম না। কয়েকটি হাই পাওয়ার পেইনকিলার দিয়েও ওর কষ্ট কমানো যাচ্ছিল না। পরে ওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ সকালে ডাক্তার বলছে এখনো তিনদিন ওকে এখানেই থাকতে হবে। এটা ভুল কি ঠিক তা বিচারের চ্যালেঞ্জ আপনাদেরকে দিলাম।
এখন প্রশ্ন হল স্যোসাল মিডিয়ায় যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আপনারা ভাল করে লক্ষ্য করুন। দয়াকরে একচোখ বন্ধ করে দেখবেন না। দীপ্তি নামের ওই মেয়েটির কোন ওড়নাই ছিল না গায়ে,যেটি দেখা যাচ্ছে সেটি হল শীতের পোশাক, সেটি ওর হাতেই ছিল, গায়ে পরাও ছিল না। আর শ্রাবণী ওর কোন কাপড় ধরে টানে নি। ওর হাত ধরেছে সেই ছবি কে অস্পষ্ট করে ছেড়ে দিয়ে বোঝানো হচ্ছে ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে।এটা পুরোটাই ভুল, মিথ্যা, সাজানো। যেমন ভাবে সাজানো মিথ্যা নাটক সাজিয়ে দীপ্তিকে আইসিইউতে বলে নাটক করা হয়েছে। তারা যে নাটক সাজিয়ে ছাত্রলীগকে শুধু বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে তার যথেষ্ট প্রমান আছে।
ডিবিসি এই ঘটনার যে লাইভ করেছে সেখানে ওই মেয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলছে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।এবং এজন্য তাকে নেবুলাইজার দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমি নিজেও শ্বাসকষ্টের রোগী। এমন গেট ভাংচুর করে আন্দোলন করতে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করলে এমনিতেই শ্বাসচাপ বেড়ে যায়, ৫ মিনিট নেবুলাইজড করলে শ্বাস স্বাভাবিক হয়ে যায়। সেই মেয়ে এখন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্যাম্পাসে।
আর শায়লা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই যে ছাত্রলীগের এত অমানবিকতার গল্প চারিধারে হচ্ছে সেখানে এই মানবিক ঘটনাটি ‘অমানবিক’ গল্পটি কেউ পড়ে না।-চ্যানেল আই
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস