ঢাকা : চাঁদার টাকার ভাগ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে মিরপুরে হিজড়া প্রধান কোকিলাকে (৪০) খুন করেন দলের অপর দুজন হিজড়া সদস্য। এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হিজড়া মমতাজ আজ শনিবার ঢাকার আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর এলাকার একটি বাসা থেকে কোকিলার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত কোকিলার পালিত কন্যা বীথি (১৮) বাদী হয়ে মিরপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ বৃহস্পতিবারই দুজন হিজড়া মমতাজ ও পায়েলকে গ্রেপ্তার করে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া হিজড়া পায়েলও গতকাল শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেপ্তার দুজন হিজড়া এখন কারাগারে আছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ হোসেন বলেন, কোকিলা ছিলেন হিজড়া দলের প্রধান। দলের সদস্যরা চাঁদার টাকা তুলে তার কাছে রাখতেন। খুনের দায় স্বীকারকারী হিজড়া মমতাজ ও পায়েল বলেছেন, হিজড়া কোকিলা দলের সদস্যদের ঠিকমতো চাঁদার টাকার ভাগ দিতেন না। এ নিয়ে দলের অপর সদস্যদের ক্ষোভ ছিল। এর আগেও তাদের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছিল। ঘটনার দিনও টাকার ভাগ না দেওয়ার বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা গুরু কোকিলাকে জবাই করে হত্যা করেন।
কোকিলা যখন খুন হন তখন পাশের কক্ষে ছিলেন তার মেয়ে বীথি। তিনি বলেন, তিনি পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুম থেকে ওঠার পর দেখেন মায়ের কক্ষের দরজা বন্ধ। পরে ঘরে ঢুকে দেখেন মায়ের লাশ। কেন হিজড়া মমতাজ ও পায়েল তার মা কোকিলাকে খুন করেছেন, তা বীথি জানেন না।
তবে তিনি বলছেন, হিজড়া পায়েল অন্য দলের হিজড়াদের তার মায়ের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। এ নিয়ে তার মা হিজড়া পায়েলের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। কেবল তা-ই নয়, পায়েল ও মমতাজ বাজার থেকে যে চাঁদার টাকা তুলতেন, তা ঠিকমতো জমা দিতেন না। এ কারণে তার মা কোকিলা তাদের (পায়েল ও মমতাজ) ঠিকমতো টাকা জমা দেওয়ার কথা বলতেন।
মিরপুরের পীরেরবাগ এলাকার বাসায় দলের অন্য হিজড়ার সঙ্গে ভাড়া থাকতেন কোকিলা। বীথি যখন ছোট ছিলেন তখন তাকে নিয়ে আসেন গুরু কোকিলা। এরপর তার কাছেই তিনি বড় হয়েছেন। বীথি বলেন, তাঁর মা অন্য হিজড়া দলের প্রধানদের মতো নন। কখনো তিনি দলের অন্য হিজড়াদের মারধর করতেন না। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন।
জ্ঞান হওয়ার পর হিজড়া কোকিলাকে মা বলে ডাকা বীথি বলেন, ‘মা খুন হওয়ার পর আমার আপনজন আর কেউ রইল না। আমার মায়ের খুনিদের ফাঁসি চাই।’
এমটিনিউজ/এসএস