নিউজ ডেস্ক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার সঙ্গেসঙ্গেই আদালতে উপস্থিত পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বিশেষ করে নারী পুলিশ কর্মকর্তারা খালেদা জিয়াকে ঘিরে ফেলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার রায় ঘোষণার সঙ্গেসঙ্গেই মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপির আইনজীবীরা নো নো, ফলস জাজমেন্ট বলে হৈচৈ করে ওঠেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, রায় ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথামতো বেগম খালেদা জিয়া হেঁটে পাশের কক্ষে চলে যান। এসময় আদালত কক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, মওদুদ আহমদ, মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদসহ অন্য নেতারা মন খারাপ করে চেয়ারে চুপচাপ বসে থাকেন।
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার বকশিবাজারের ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এই রায় দেন। এছাড়া এই মামলায় তারেক রহমানসহ অন্য ৫ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড, পাশাপাশি ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের জন্য মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে দুইটায় আদালতে পৌঁছান। বকশি বাজারের আলীয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে পৌঁছানোর পরই ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান মামলার রায় পড়া শুরু করেন। ৬৩২ পৃষ্টার রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়া হয়। এরপর বেলা আড়াইটায় রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায়ে খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক জানান, সামাজিক অবস্থান এবং বয়স বিবেচনায় মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়।
এছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৫ আসামিকে অর্থদণ্ডসহ ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মাগুরা বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এবং জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন এবং কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং মমিনুর রহমান পলাতক রয়েছেন।
রায় শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, রায়ের কপি হাতে পাওয়া পর উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। অন্যদিকে, মামলার রায়ে সন্তুোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
এরপর পৌনে তিনটার দিকে বেগম খালেদা জিয়াকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগার ভবনে নেয়া হয়। গেল ২৫ জানুয়ারি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের তেসোরা জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ মোট ৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস