ঢাকা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সাজা এবং রায় পরবর্তী পরিস্থিতি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছে বিএনপি। তবে এই আলোচনার বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কিছু জানানো হয়নি।
খালেদা জিয়ার বন্দীজীবনের পঞ্চম দিনে মঙ্গলবার বিকাল সোয়া চারটার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। শেষ হয় সাড়ে পাঁচটার দিকে।
বৈঠকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, তুরস্ক, জাপান, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা ও চীন, সুইডেনসহ ২০টির বেশি দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন, রিয়াজ রহমান, হারুন অর রশিদ, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল প্রমুখ।
বিদেশি কূটনীতিকদেরকে যা জানাল বিএনপি:-
বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কথা বলেননি বিএনপি নেতারা। তবে চেয়ারপারসন কার্যালয়ে একাধিক কর্মকর্তা ও বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার রায়ের পর সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। গুলশান কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রায় ছাড়া এখন আর বলার কী আছে সেটা তো আপনিও বোঝেন। কয়েকদিন আগেও বৈঠক হয়েছে। এটা নিয়মিত বৈঠক।’
অন্য একজন নেতা জানান, বিএনপি কূটনীতিকদেরকে বলেছে যে, খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাননি। এরপরও তারা কোনো ধরনের কঠোর কর্মসূচি না দিয়ে নমনীয় কর্মসূচি দিচ্ছেন দেশে শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছে। সেদিন থেকেই বিএনপি নেত্রী কারাগারে আছেন।
এই রায়কে সরকারের প্রতিহিংসার ফসল আখ্যা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবিতে এখন পর্যন্ত চার দিন নানা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। তবে গত কয়েক বছরে বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে যে নাশকতা ও সহিংসতা হয়েছিল, এবার তা দেখা যায়নি।
রায়ের দিন মির্জা ফখরুল জানান, খালেদা জিয়া রায়ের আগের দিন তাদেরকে হঠকারী কোনো কর্মসূচি দিতে নিষেধ করেছেন এবং এ কারণে তারা ‘শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলনে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে চান। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চেষ্টা করলে মওদুদ আহমদকে ফোন করা হলে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন রেখে দেন।
আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণার পাঁচ দিন ৩০ জানুয়ারি গুলশান কার্যালয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।
এর পরদিন বৈঠকে বসায় কূটনীতিকদের কড়া সমালোচনা করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কাদের সেদিন বলেন, ‘আপনারা যারা কাল (৩০ জানুয়ারি) উপস্থিত হয়েছেন তাদের দেশের কোনো বিরোধীরা কূটনৈতিকদের সাথে আদালতের রায় নিয়ে নালিশ করে?’।
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের সেদিন বলেন, ‘আমাদের দেশের আদালত যে কোনো অপরাধের মামলার বিচার কাজ পরিচালনা করবে, তার রায় দেবে। এতে বিদেশিদের কী করার আছে?
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস