নিউজ ডেস্ক : দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ বিএনপির। এরইমধ্যে কেন্দ্র থেকে পৌঁছে গেছে জেলায় জেলায়। কী আছে বিএনপির এই লিফলেটে?
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি কর্তৃক প্রকাশিত একটি লিফলেটের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রতিহিংসার বিচারে বন্দি; গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জনগণের আস্থার প্রতীক দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার দেশবাসীর প্রতি আহ্বান’। আরেকটি লিফলেটের শিরোনাম ‘শেখ হাসিনার ১৫ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার/খারিজ বনাম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভিত্তিহীন মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড’।
প্রথম লিফলেটে মোট ৯টি পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছে:-
> দেশের সব প্রথা-প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। কথা বলার অধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই, মানুষের ভোটের অধিকার নেই। ১০ টাকা দরে চাল খাওয়ানোর ওয়াদাকে ভাঁওতাবাজি প্রমাণ করে চালের দাম এখন ৭০ টাকা। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম।
> মানুষের কাজের সংস্থান নেই। চাকরির খোঁজে লুকিয়ে বিদেশ যাওয়ার পথে আমাদের তরুণরা সাগরে ডুবে মরছে।
> উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় পাঁচ-দশগুণ বাড়িয়ে এরা লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে। দুর্নীতি এখন লাগামছাড়া।
> দেশে ন্যায়বিচার নেই, ইনসাফ নেই, জনগণের নিরাপত্তা নেই। নারী ও শিশুরা পাশবিক নির্যাতনের শিকার।
> দেশে এখন সত্যিকারের সংসদ নেই। তথাকথিত সংসদে নেই প্রকৃত বিরোধী দল। শাসকদের কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই।
> অনেক মানুষ গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। দুঃসহ বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন অগণিত নেতাকর্মী ও ভিন্নমতের মানুষরা। অসংখ্য মানুষ হামলা-মামলা-হুলিয়া নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
> আমাকে আপনাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হলেও বিশ্বাস করবেন আমি আপনাদের সঙ্গেই আছি।
> আপনারা গণতন্ত্রের জন্য, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, জনগণের সরকার কায়েমের জন্য শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবো না।
আর দ্বিতীয় লিফলেটটিতে মূলত দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে।
> জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটির বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। অথচ ওই ট্রাস্টের কোনো অর্থই আত্মসাৎ হয়নি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে একখণ্ড জমি ক্রয় ছাড়া বাকি এক টাকাও কোথাও খরচ করা হয়নি।
বরং সেই ২ কোটি টাকা এখন সুদে-আসলে ৬ কোটি হয়ে ট্রাস্টের নামেই ব্যাংকে পড়ে আছে। ওই ট্রাস্টের গঠন ও পরিচালনার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই এবং ছিল না…। এরপরও আইনের মারপ্যাঁচে পুরোপুরি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছেন।
> বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে কারাগারে যেতে হয়েছে। দেশবাসী তাদের কাউকেই প্রত্যাখ্যান করেনি- বরং তাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। যারা তাদের কারাগারে নিয়েছিল, তারাই আজ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
> ১/১১ এর সেনাসমর্থিত জরুরি সরকারের বিদায়ের প্রাক্কালে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা উভয়ের নামে মামলা দায়ের করা হয়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে তার বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার বা অনুগত বিচারকের মাধ্যমে বাতিল করিয়ে নেন।
> প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার বা খারিজে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদ মানিক, বিচারপতি শামসুল হুদাসহ একাধিক বিচারপতির নাম উল্লেখ করে তাদের ‘অনুগত ভূমিকা’র অভিযোগ তোলা হয়েছে লিফলেটটিতে।
> এক টাকাও দুর্নীতি না করে খালেদা জিয়াকে যদি জেলে যেতে হয়, তবে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত শেখ হাসিনার ও অন্যান্যদের কী শাস্তি হওয়া উচিৎ, তা ভবিষ্যতে জনগণের আদালতেই নির্ধারিত হবে। --কালের কন্ঠ
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস