সোমবার, ১২ মার্চ, ২০১৮, ০১:৫৯:১৯

‘কয়টা ভাত দে না- বাচ্চাডারে খাওয়াই’

‘কয়টা ভাত দে না- বাচ্চাডারে খাওয়াই’

ঢাকা: একশিশু কোলে, আরেকটা আচল ধরে হাঁটছে। প্রতিবেশি নাজমার কাছে এসে, কান্না ভেজা কণ্ঠে সুমনা বেগম বলেন, ‘কয়টা ভাত দে না- বাচ্চাডারে খাওয়াই’।

জানা গেলো, তারা দু’জনেই বান্ধবী। দু’জনেরই আলাদা স্বামী, সন্তান, সংসার আছে। চাকরি করেন একই গার্মেন্টে। আজ একজনের ঘরবাড়ি পুড়ে নিঃস্ব, আরেকজনের বাড়ি ঘর তছনছ। আগুন লেগে যেতে পারে এই ভয়ে ঘরের সব মাল সরিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ছিলেন নাজমা। ভাগ্য ভাল তাই আগুন এ পর্যন্ত আসেনি। তার ঘর ছিল ঢালের উপরে।
এবার সুমনার কাছে এসে নাজমা বলে, ‘কিছুই তো রান্না করিনি। বহ, বাচ্চাদের জন্য কিছু আনাইতেছি’।

এ দৃশ্য চোখে পড়লো রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরে ইলিয়াস আলী মোল্লা বস্তিতে। রোববার দিবাগত রাতে এখানে আগুন লাগে। এতে প্রায় ৮ হাজার ঘর পুড়ে গেছে। রাত তিনটার দিকে এই আগুনের সুত্রপাত হয়।

একটু দূরে গিয়ে দেখা যায় আরেক আহাজারির দৃশ্য। বস্তিতে আগুন লাগার খবরে হন্যে হয়ে গাজীপুর থেকে ছোট বোনের কাছে আসে শরিফ। খুঁজে পেয়েছে বোনকে। এ সময় বোন সারমিন ভাইকে দেখেই অগ্নিশর্মা। বলে ‘কী দেখতে আইছস? আমাদের সব পুইর‌্যা গ্যাছে, হেইডা? কিছু নিয়া আইতে পারলি না। ক্ষুধায় তো তোর ভাইগনা আমারে মাইরা ফেলবো’।

এ সময় ছোট বোনকে কিছু না বলেই দোকানের দিকে হাঁটা দেন শরিফ। সরেজমিনে দেখা যায়, হাজার হাজার পরিবার আগুনে নি:স্ব হলেও কেউ কোনো সহায়তার জন্য আসেনি। এনিয়েও ক্ষোভ রয়েছে মানুষের মধ্যে।

এক নারী সংবাদ কর্মী শফিক নামে এক ব্যক্তির কাছে সহায়তা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেন, ‘কোনো সহায়তা পরের কথা নাস্তা পর্যন্ত করতে পারিনি। আমরা না হয় থাকতে পারি, ছোট বাচ্চারা কি থাকতে পারে? আমাদের এমপিও তো কোনো সহায়তা পাঠাইলো না’।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আসে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে