ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডেক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে ফেরত পাঠাতে হবে। এমনটাই জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর যুগ্ম পুলিশ কমিশনার শেখ নাজমুল আলম।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হাসপাতালে আনা নেয়ার জন্য দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এমন নির্দেশনা রয়েছে ।
শেখ নাজমুল আলম সাংবাদিকেদর বলেন, আমাদের দায়িত্ব ছিল উনাকে নিরাপদে হাসাপাতালে পৌঁছে দেওয়া। তা আমরা করেছি। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর উনাকে পুনরায় কারাগারে পৌঁছে দিতে হবে, আমার কাছে এটুকু তথ্য রয়েছে।
এদিকে বিএসএমএমইউ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে আজ শনিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিএসএমএমইউয়ে আনা হয়। তাকে কালো রঙের একটি গাড়িতে করে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তার গাড়ির সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্স, পেছনে দুটি গাড়ি ছিল। এছাড়া আগে-পিছে র্যাবের কড়া পাহারা ছিল।
হাসপাতালে আনার পর খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউর কেবিন ব্লকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে ৫১২ নম্বর কেবিনে রাখা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়ার রক্ত পরীক্ষা ও এক্সরে করা হবে। এসব পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে মেডিকেল বোর্ড পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে।
বিএসএমএমইউর কোষাধ্যক্ষ আলী আসগর মোড়ল জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাকে দেখবেন। এরপর কী হবে সেটা মেডিকেল বোর্ড ঠিক করবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান শাহীন। বোর্ডে সদস্য রয়েছেন ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।
এর আগে গত বুধবার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ড. শামসুজ্জামান জানিয়েছিলেন, আগের সমস্যাগুলোর পাশাপাশি খালেদা জিয়ার নতুন কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। অপাতত তার রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি দুই হাঁটুতে এক্সরে করাতে হবে। পরীক্ষার পরই বোঝা যাবে তার অসুস্থতা গুরুতর কিনা। এরপরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।
ডা. শাহীন বলেন, খালেদা জিয়ার দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা। তার হাঁটুতে এখন যে ব্যথা তা বয়স থেকে হতে পারে। আগের অপারেশনের জেরে হতে পারে, আবার নতুন হতে পারে। তার কোমর ও ঘাড়ে বড় ধরনের কোনো সমস্যা আছে কিনা তা জানতে সিটিস্ক্যান বা এমআরআই করানো লাগতে পারে। তার ব্যথা কেবল শিনশিন-ঝিনঝিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নাকি হাড় পর্যন্ত পৌঁছেছে তা জানতে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি বন্দি রয়েছেন।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস