ঢাকা: আপাতদৃষ্টিতে দেখেছি তিনি (খালেদা জিয়া) ভালো আছেন। আমাদের এখানে তার কয়েকটি এক্সরে করানো হয়েছে। আগামীকাল রিপোর্ট পাওয়া যাবে। রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা তার অবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।’
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। পরিচালক বলেন, ‘খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন তার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক থাকুক, আমরা সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’ তবে অনেকেই মনে করছেন এখানেই খালেদার জেদের কাছে হার মানলো সরকার।
গত কয়েকদিন আগে সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়াকে কিছু নতুন ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ নিতে চাইছেন না। তাই তারা মনে করছেন, খালেদা জিয়াকে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। অবশেষে আজ খালেদার সেই জেদই ভাঙতে হলো সরকারকে। আজ খালেদার চিকিৎসা শেষে (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুনই তো বলে দিয়েছেন ‘খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন তার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক থাকুক, আমরা সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দুপুর দেড়টার দিকে খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে ফের কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর পৌনে ২টায় তাকে বহনকারী গাড়ি বহর কারাগারে পৌঁছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারাগার থেকে বিএসএমএমইউ-এ নেয়া হয় খালেদা জিয়াকে। সেখানে প্রথমে তাকে নেয়া হয় পাঁচ তলার কেবিন ব্লকের ৫১২ নম্বর কেবিনে। এ সময় তিনি হেঁটেই লিফটে উঠেন।
সেখানে প্রথমে তার রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। এরপর এক্সরে করানোর জন্য নীচ তলার দক্ষিণ পাশের বিল্ডিংয়ে নেয়া হয় খালেদাকে। এসময় তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুনকে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হয়। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গঠিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশের পর তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে আনার খবরে রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। তাকে হাসপাতালে আনার সময় শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করে বিএনপি ও ছাত্রদলের কিছুকর্মী। পরে পুলিশের ধাওয়ায় তারা পালিয়ে যায়। এ সময় অন্তত চারজন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এই রায়ের পরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল ও জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। আদালত তাকে চার মাসের অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন দিলেও অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় তিনি মুক্তি পাননি।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি