ঢাকা : গভীর রাতে ২০ ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দিল কর্তৃপক্ষ। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে অন্তত ২০ জন আবাসিক ছাত্রীকে বের করে দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ।
রাত সাড়ে ১১ টা থেকে রাত সাড়ে ১২ টার মধ্যে পর্যায়ক্রমে ৯ জন ছাত্রী হল থেকে বেরিয়ে যান। তবে তারা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী নাকি কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষের শিক্ষার্থীরা- সে বিষয়টি নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলেননি।
হল থেকে একজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, গত ১০ এপ্রিল রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে হলের ভিতর ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এশা’র গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় আন্দোলনের পক্ষের সাধারণ ছাত্রীরা। ওই ঘটনার সঙ্গে ২৬ জন ছাত্রী জড়িত রয়েছে বলে হল কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত করে। এই ২৬ জনের অভিভাবকদের গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে ডেকে আনা হয়। অভিভাবকদের কাছে ছাত্রীদের তুলে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, এসব আবাসিক ছাত্রীকে তাদের অভিভাবকরা নিয়ে যাচ্ছেন। এত রাতে কেন ছাত্রীদের থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, বিষয়টি হল প্রভোস্ট ভাল বলতে পারবেন।
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল দেয়া হলে ফোনটি রিসিভ করেননি।
রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সুফিয়া কামাল হলের সামনে আসেন আবাসিক ছাত্রী রিমির বাবা কামরুল হাসান ও চাচা। রিমির চাচা বলেন, সন্ধ্যায় হল থেকে ফোন করে বলা হয়েছে যে তাদের মেয়েকে যেন রাতের মধ্যেই হল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। হল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়েই তিনি রিমিকে নিতে এসেছেন। হল থেকে বের করে দেয়া ছাত্রীদের মধ্যে অন্তী , শারমিন ও কামরুণ নাহার লিজার নাম রয়েছে।
গত বুধবার অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের বৈঠকে এশাকে হেনস্তার জন্য ২৬ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। এরপরই হল কর্তৃপক্ষ হলের শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের ধমক দিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষার্থীর স্থানীয় অভিভাবকদের ডাকা হয় হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সন্ধ্যার পর থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ব্যাগ নিয়ে হল থেকে বের হতে দেখার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন একজন দারোয়ান। ওই দারোয়ান বলেন, অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রী বের হয়ে গেছেন।
আবদুল আউয়াল নামে এক অভিভাবক রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আমার বোনকে ফোন দিয়েছিলাম। সে না ধরে তার এক শিক্ষক ধরেন। তিনি আমাকে আসতে বলেন।’ রাত ১২টার দিকে গণিত তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শারমিনকে নিয়ে তার স্থানীয় অভিভাবক হল থেকে বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে তারা কোনো কথা বলতে চাননি। শারমিনের অভিভাবক বলেন, তাদের কোনো কথা বলতে মানা করা হয়েছে।
রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আরেক ছাত্রীকে নিয়ে তার অভিভাবক বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকরা এগিয়ে গেলে তারা কোনো কথা না বলে দ্রুত মোটর সাইকেলে চলে যান। মো. ফারুক নামে একজন অভিভাবককে রাত সাড়ে ১২টার দিকে হলের সামনে দেখা যায়। ঢাকার ধামরাই উপজেলা থেকে মেয়েকে নিতে আসেন তিনি। ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, রাত ৮টার দিকে আমাকে ফোন করে মেয়েকে নিয়ে যেতে বলা হয়। সেজন্য ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে আমাকে আসতে হয়েছে
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস