ঢাকা : এবার বিআরটিসি বাস কেড়ে নিল তরুণীর পা। দুই বাসের পাল্লায় সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হাসানের হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে বাসের চাপায় এবার পা হারালেন এক তরুণ।
গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকার ফুটওভার ব্রিজের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় বিআরটিসি দ্বিতল বাসের চাপায় রুজিনা আক্তার (১৭) নামে এক তরুণীর ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সে রাজধানীর নিকেতন এলাকার একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে।
পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দ্রুত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নিয়ে যায়। রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে তার অস্ত্রোপচার চলছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রুজিনার ডান পা সামান্য লেগে আছে। অস্ত্রোপচারের সময় পা’টি কেটে ফেলা বা রাখার সিদ্ধান্ত হবে। এদিকে ঘটনার পর পুলিশ বিআরটিসি বাসটিসহ চালক শফিকুলকে আটক করেছে।
বনানী থানার ওসি ফরমান আলী বলেন, ‘গতকাল রাত ৯টার দিকে চেয়ারম্যানবাড়ি ফুটওভার ব্রিজের কাছে ওই নারী ফুটপাত থেকে নেমে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ওই সময় মহাখালী থেকে কাকলীমুখী বিআরটিসির একটি বাস তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তার পায়ে আঘাত লাগে। পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়েছে।’
পঙ্গু হাসপাতালে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিত্সার সময় রুজিনা সাংবাদিকদের জানায়, সে নিকেতনের একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে। গতকাল এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে মহাখালীর আমতলীতে যায়। সেখানে থেকে নিকেতনে ফেরার জন্য সে রাস্তায় যায়। হাত উঁচিয়ে বাসটিকে থামার সংকেত দেয়।
কিন্তু বাসটি না থেমে তার ওপর দিয়ে উঠিয়ে দেয়। প্রথমে সে ধাক্কা খায়। পরে বাসটি তার পায়ের ওপর চাকা তুলে দিয়ে চলে যায়। পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ডান পায়ের হাঁটুর নিচে তার পা-টি একটু লেগে আছে। প্রায় বিচ্ছিন্ন বলা যায়। এখন অস্ত্রোপচার করা হবে। তখনই পা রাখা বা কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হবে। রোগীকে বাঁচানোই এখন আমাদের বড় কাজ।’
হাসপাতালে রুজিনার খালাতো বোন আসমা বেগম বলেন, ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ঘোষগাঁও এলাকায় রুজিনার বাড়ি। তার বাবার নাম রসুল মিয়া। বর্তমানে নিকেতন ১২ নম্বর সড়কে একজন সাংবাদিকের বাসায় কাজ করে রুজিনা।
ছয় বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে রুজিনা দ্বিতীয়। রাতেই গাজী টিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, তাঁর বাসার গৃহকর্মীর এক পা নিয়ে গেছে দানব বাস। এরপর রাতে হাসপাতালে রুজিনাকে দেখতে যান তিনি।
ধানমণ্ডিতে সেবিকা নিহত : এদিকে রাতে ধানমণ্ডিতে ট্রাক চাপায় রিকশার আরোহী এক নারী নিহত হয়েছেন। মাসুদা বেগম (৩৫) নামের ওই নারী এসপিআরসি হাসপাতালের নার্স (সেবিকা) ছিলেন।
ধানমণ্ডি থানার এসআই মিরাজ হাসান জানান, গতকাল রাত ৯টার দিকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন বিয়াই আরিফকে দেখতে যাওয়ার সময় হাসপাতালের কাছে মাসুদার রিকশাকে চাপা দেয় ট্রাক। রিকশাচালক বেঁচে গেলেও আরোহী মারা যান। নিহত মাসুদার স্বামীর নাম জামাল। বাড়ি বরিশালের মুলাদীর কৈলারচরে। বর্তমানে শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পেছনে খাজা ভবনের কাছে টিনশেট বাসায় ভাড়া থাকতেন।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস