ঢাকা : রোজার মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আগামী রবিবার থেকে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে
বিদ্যুৎ বিভাগ। রবিবার থেকে আবাসিক এলাকার বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। যারা আবাসিক বাসা-বাড়িতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছেন, তাদের সংযোগ কেটে দেওয়া হবে। আগামী রবিবার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ডেসকো-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর অভিজাত চার আবাসিক এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ধানমন্ডি থেকে সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা ও বাণিজ্যিক ভবন আগামী ১০ মাসের মধ্যে সরিয়ে নিতে গত ৫ জুলাই নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিদ্যুৎসহ পানি ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বলা হয়। এরপর গণপূর্ত বিভাগ ও বিদ্যুৎ বিভাগ একটা সমন্বয় সভা করে।
সেখানে বলা হয়, এসব এলাকার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ কেটে দেওয়া হবে। হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে আগামী রবিবার।
বৃহস্পতিবার (৩ মে) বিদ্যুৎ ভবনে গ্রীষ্ম মৌসুম ও আসন্ন রোজার মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠকে অবৈধ সংযোগের কথা বলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
এছাড়া, সভায় বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মানসুর মো. ফয়জুল্লাহ, পিডিবি’র চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদসহ বিভিন্ন বিতরণ সংস্থার প্রতিনিধি এবং দোকান মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অবৈধ সংযোগ ছাড়া প্রতিবছরের মতো সিএনজি স্টেশন বিকাল পাঁচটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা বন্ধ রাখা, অতিরিক্ত আলোকসজ্জ্বা না করা, ইফতার ও তারাবির সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহার সীমিত রাখার নিদের্শ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সভায় নসরুল হামিদ বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে চলতি মাসের মধ্যে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট রোধ করতে সাবস্টেশনগুলোর ক্যাপাসিটি বাড়ানো হচ্ছে।’ তিনি দোকান মালিকদের অবৈধ সংযোগ চিহ্নিত করতে, অতিরিক্ত এসির ব্যবহার রোধ করতে এবং অতিরিক্ত আলোকসজ্জা বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেগুলো হচ্ছে— রোজার মাসে দোকানপাট, বিপণী বিতান খোলা রাখার বিষয়ে বিদ্যমান বিধিবিধান অনুসরণ করা, বিদ্যুতের সর্বোচ্চ ব্যবহারের সময় সন্ধ্যাবেলা রি-রোলিং মিল, ওয়েল্ডিং মেশিন, ওভেন, ইস্ত্রির দোকানসহ বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী সরঞ্জাম
বন্ধ রাখা, সুপার মার্কেটে, পেট্রোল পাম্প, সিএনজি স্টেশনে অতিরিক্ত বাতি ব্যবহার বন্ধ রাখা, ইফতার ও সেহেরির সময় শপিং মল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে এসির ব্যবহার সীমিত রাখা এবং ইফতার, তারাবি ও সেহেরির সময় লোডশেডিং যাতে না হয়, তার উদ্যোগ নিচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদ সারওয়ার বলেন, ‘হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময় আগামী রবিবার শেষ হচ্ছে। তাই আমরা রবিবার থেকেই সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান শুরু করবো।’
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস