নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর চকবাজারে ইফতারে থাকে ভোজনবিলাসীদের জন্য অন্য রকম আয়োজন। শাহী পরোটা থেকে শুরু করে গামলা আকারের বিশাল জিলাপি, আস্ত খাসির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, কয়েলের রোস্ট, ডিমের চপসহ নানা ইফতারি আইটেম। বিশেষ ইফতারি আইটেমের মধ্যে রয়েছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘বড় বাপের পোলায় খায়’।
এটি চকবাজারের সব আইটেম থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। এক ডজনেরও বেশি মশলার সঙ্গে আরো এক ডজন আইটেমের বিভিন্ন মাংস ও কাবাবের সঙ্গে ডাল চিড়া ও ভাজা চিড়ার সমন্বয়ে তৈরি খাবারটি পুরান ঢাকার মানুষের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়।
রাজধানীর চকবাজার এলাকায় ‘বাবা মাকুসা‘ নামে তিনটি ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে মোহাম্মদ হোসেন মহাজন ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ইফতার আইটেম বিক্রি করেন। হোসেন মহাজন জানান, ‘আমাদের বাপ-দাদারা ইফতারের এ আইটেমটা ‘শেখ চূড়া কি ভর্তা’ নামে বিক্রি করতেন। ডাল চিড়া, ভাজা চিড়া, খাসির কাবাব, খাসির রানের মাংস, খাসির মগজ, খাসির কলিজা, মুরগির মাংস, হাসের মাংস, ডিম, আলুভাজি ও ঘি’র সঙ্গে ১২ প্রকারের মসলা মিশিয়ে এটি তৈরি হতো। ওই সময় খাবারটি কাঁঠাল পাতায় বিক্রি হতো। গরিব-মিসকিনরা এ খাবারের সুঘ্রাণ শুকে একে-অপরকে বলতো, ‘ওই দেখ, বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙায় ভইরা লইয়া যায়’।
বাবুর্চি মোহাম্মদ ইমরান জানান, আগের যুগে রাজা বাদশারা ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ খেতেন। এখন সাধারণ মানুষেরা খায়। এই বিশেষ খাবার একমাত্র চকবাজারেই পাওয়া যায়। প্রতি কেজির দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তবে বৃটিশ আমলে যা এক আনা/দুই আনা দরে বিক্রি হতো বলে জানান ইমরান।
তিন পুরুষ ধরে চকবাজারে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বিক্রি করেন হাজি শহিদ। তিনি জানান, শুধু বিখ্যাত খাবার ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ কেনার জন্য প্রতিদিন ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বহু মানুষ ভিড় করেন চকবাজারে। প্রতিদিন তার দোকানে ২০ হাজার টাকার ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বিক্রি হয় বলে তিনি জানান।
পুরান ঢাকার আর্মিটোলা থেকে চকে ইফতার কিনতে এসেছিলেন ব্যবসায়ী শামীম হোসেন। তিনি আধা কেজি ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ কিনেছেন। শামীম জানান, এই খাবার আইটেম শুধু রমজানে পাওয়া যায়। খেতে দারুন স্বাদের হওয়ায় তিনি রমজান এলেই সব সময় কিনেন। আধা কেজি ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ অনায়াসে পরিবারের চার পাঁচজন খেতে পারবেন।
এমটিনউজ২৪.কম/টিটি/পিএস