ঢাকা: ঢাকার ধামরাইয়ে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের ফুটবল খেলায় নকআউট পর্বে আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়া গোপাল (২৫) নামে এক তরুণ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার (৩০ জুন) রাতে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নে ষাট্টা গ্রামের নিজ ঘরে গলায় রশি পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, গোপাল আর্জেন্টিনার সমর্থক ছিলেন। শনিবার রাতে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের খেলায় আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়ায় গোপাল আত্মহত্যা করে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গোপাল নামের ওই যুবক আর্জেন্টিনার সমর্থক ছিলেন আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়াতেই গোপাল আত্মহত্যা করে। মৃত্যুর সময় তার পরনে আর্জেন্টিনার জার্সি ছিল। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে ৩০ জুন গোল পাল্টা গোলে দারুণ উত্তেজনা ছড়াল রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর প্রথম ম্যাচ। একেকটা আক্রমণ তো নয়, যেন টর্নেডো! সব পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপে। তার জোড়া লক্ষ্যভেদে ৪-৩ গোলে জিতে আর্জেন্টিনাকে বিদায় করেছে ফ্রান্স।
একঝাঁক প্রতিভায় ঠাসা দলটার সামনে আজ দাঁড়াতেই পারেনি লিওনেল মেসির দল। তবু শেষ মুহূর্তের পাল্টা লড়াইটাই যা একটু সান্ত্বনা হয়ে থাকল আর্জেন্টিনার।
বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে নবাগত আইসল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে আর্জেন্টিনা। পরে দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হার নিভু নিভু হয়েছিল আর্জেন্টিনার যে আশার প্রদীপটি, সেই প্রদীপে আবার নতুন করে জ্বালানি দেয় নাইজেরিয়া। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতে শেষ ষোলোতে পৌঁছে আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচেই আর্জেন্টিনাকে মুখোমুখি হতে হয় ফ্রান্সের। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হয় ম্যাচটি। শুরু থেকেই ছন্দময় খেলা খেলতে থাকে দুই দল। প্রথমদিকে আর্জেন্টিনার থেকে বেশি আক্রমণাত্বক খেলে ফ্রান্স। যদিও ৬৯ ভাগ বল আর্জেন্টিনার পায়ে আর ৩১ ভাগ বল ছিল ফ্রান্সের পায়ে। তবে খেলার সময় বাড়ার সাথে সাথে আক্রমণও বাড়ে আর্জেন্টিনার।
খেলা শুরু হওয়ার ৮ মিনিটের মাথায় ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। দারুণ শর্ট করলেও বারে লেগে ফিরে আসে বল কিন্তু ১২ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি আর মিস হয়নি পগবাদের। ১-০ গোলে এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের ৪০ মিনিটে ডি মারিয়ার দারুণ শর্টে সমতায় ফেরে আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধ শেষে ১-১ সমতায় থাকে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তৃতীয় মিনিটে ডি-বক্স থেকে শট নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। বলের গতিপথে থাকা গাব্রিয়েল মের্কাদো পা সরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল তার পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।
৫৬তম মিনিটে ফেদেরিকো ফাসিওর ভুলে গোল খেতে বসেছিল আর্জেন্টিনা। কাছাকাছি গ্রিজমান থাকার পরও পরও এই ডিফেন্ডার ব্যাকপাস দেন গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কো আরমানির আওতার বাইরে। ছুটে গিয়ে শট নেন গ্রিজমান। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
পরের মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান বাঁজামাঁ পাভার্দ। আরেক ডিফেন্ডার লুকা এরনঁদেজের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত ভলিতে বল পাঠান জালে।
৬৪তম মিনিটে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ডি-বক্স থেকে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান এমবাপে। ঝাঁপিয়ে গ্লাভস ছোঁয়ালেও পিএসজি ফরোয়ার্ডের গোল ঠেকাতে পারেননি আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক।
চার মিনিট পর আবার এমবাপের গোল। ডি-বক্সে অলিভিয়ে জিরুদের চমৎকার বাড়ানো বলে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে জালে পাঠান এই তরুণ ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের ৮৭ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু ডি বক্সের ভেতর ডান পায়ের দুর্বল শট লরিসের তালুবন্দী হয়। অতিরিক্ত সময়ের দুই মিনিটের মাথায় মেসির বাড়ানো বল থেকে হেড থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে তৃতীয় এবং সান্তনাসূচক গোলটি করেন আগুয়েরো। ৪-৩ গোলের হার নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলো আর্জেন্টিনাকে।