নিউজ ডেস্ক : ২০ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি দুর্বৃত্তদের ছোড়া বোমার আঘাতে আহত হয় ফেনীর স্কুলছাত্র মিনহাজুল ইসলাম অনিক। অনিক এ সময় প্রাইভেট পড়া শেষে বাসায় ফিরছিলেন।
বোমায় দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনিকের। একটি চোখের আলো নিভে যায়। বাম চোখে অল্প অল্প দেখতে পারেন। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে পরের বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিল অনিক। এবারও সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় আছে তার। ১৯ জুলাই এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।
৫ জানুয়ারি আহত অনিককে প্রথমে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে চোখের চিকিৎসার জন্য তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
সে সময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন অনিককে দেখতে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে যান। সেখানে তিনি অনিকের খোঁজ খবর নেন।
অনিকের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনিককে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট তৈরিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী।
এইচএসসিতে অনিক জিপিএ-৫ পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন।
তিনি লিখেছেন, অনিকের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বিক তদারকির কিছু দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হয়েছে। অনিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করার বিষয়টি আমি জানতে পারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন পেয়ে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শোনো, রেহানা (শেখ রেহানা) আমাকে লন্ডন থেকে ফোনে জানিয়েছে, অনিক নামে একজন স্কুল ছাত্র, মেট্রিক পরীক্ষার্থী, চোখে গুরুতর জখম নিয়ে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে ভর্তি আছে। ওকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করো।
আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথার পরিপ্রেক্ষিতে বললাম যে ও তো ঢাকা মেডিকেলে; আমি গতকাল দেখে এসেছি। উনি বললেন, খোঁজ নাও, ও চক্ষু বিজ্ঞানে আছে। আমি অবাক হয়ে গেলাম পরের দিন অনিককে চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালে দেখে। যে খোঁজ আমার রাখার কথা সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং রেহানা আপা রেখেছেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য অনিককে ২২ জানুয়ারি ভারতের শংকর নেত্রালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে চার বার অস্ত্রোপচার শেষে অনিক এখন মোটামুটিভাবে সুস্থ।
অনিকের রেজাল্টের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে ডা. লেনিন বলেন, ‘মোবাইলে আমি মেসেজ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিষয়টি জানিয়েছে। নিশ্চয় প্রধানমন্ত্রী অনেক খুশি হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নানা সমস্যার মধ্যেও অনিক তার সাফল্য ধরে রেখেছে। সে ভবিষ্যতে আরও অনেক ভালো করবে এই আত্মবিশ্বাস আছে। অনিককে অভিনন্দন জানাই।’