ঢাকা: ঈদের প্রায় ১০ দিন বাকি থাকলেও পশুর হাটে নেওয়া হয় ‘বাহাদুর’কে। তার আগেই ২৮ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঝকঝকে তকতকে পুরো শরীর। বাদামি রঙের শরীরে আলো পড়লে জ্বলজ্বল করে। হাঁটাচলার সময় গম্ভীর ভাব নিয়ে পা ফেলে ধীরে ধীরে। বেশ রাগ নিয়ে তাকিয়ে থাকে। সঙ্গী থাকে তিন-চারজন। নাম তার ‘বাহাদুর’। এবারের কোরবানি ঈদে ওর কদর বেশ চলছে। যত্নআত্তির কমতি নেই।
তবে আপাতত ‘বাহাদুর’ নামের এই গরুটি খামারেই থাকবে। ঈদের আগের দিন পাঠানো হবে ক্রেতার কাছে। ‘বাহাদুরের’ দেখা পাওয়া গেল মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে। গত বছর এই খামার থেকেই বিক্রি হয়েছিল ‘সুলতান’। সুলতানের মতো বাহাদুর এসেছে সুদূর মার্কিন মুলুকের টেক্সাস থেকে। বাহাদুর অবশ্য সুলতানের চেয়ে উচ্চতায় কিছুটা খাটো। তবে দৈর্ঘ্যে কিছুটা বড়। সব মিলিয়ে বাহাদুর উচ্চতায় সাড়ে পাঁচ ফুট। আর মুখ থেকে লেজ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য সাড়ে ১০ ফুট। ওজন ১৫০০ কেজি। মাথায় শিং নেই বললেই চলে।
সাদিক অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইমরান হোসেনের দাবি, গরুটির মাংস হবে ১২০০ কেজি বা ৩০ মণ। রাজধানী ঢাকায় এবারের কোরবানির জন্য এটিই সবচেয়ে বড় আকারের গরু।
ইমরান হোসেনের কাছ থেকে জানা গেল ‘বাহাদুরের’ জীবনবৃত্তান্ত। তিনি বলেন, এটির বয়স এখন চার বছর। চলতি বছরের শুরুর দিকে গরুটিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আনা হয়। মাসখানেক ধরে এটি সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে রয়েছে।
বাহাদুরকে প্রতিদিন বেশ আদরযত্নের মধ্যে রাখতে হয় জানিয়ে ইমরান হোসেন বলেন, সুলতানের মতো এই গরুকে প্রতিদিন তিন বেলা গোসল করাতে হবে। প্রতিবারই গোসলের পর চলে বাহাদুরের গা মুছে দেওয়ার পর্ব। এ ছাড়া গরুটিকে প্রতিদিন গম-ভুসি মিলিয়ে ৩০ কেজি দানাদার খাবার দিতে হয়। এর সঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ কেজি সবুজ ঘাস খাওয়ানো হয়। খুব বেশি গরম আবার বাহাদুর সহ্য করতে পারে না। তাই যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে ফ্যানের বাতাস দেওয়া হয়। তবে বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে ফেলেছে বাহাদুর। এই গরুটি ব্রাংগুস প্রজাতির।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহমা ও আংগুস প্রজাতির শংকরে ব্রাংগুস প্রজাতির গরুর প্রজনন করা হয়। মাংস উৎপাদনের জন্য মার্কিন ব্রাংগুস জাতের গরুর প্রজনন করানো হয়ে থাকে। এই জাতের গরু থেকে অন্যান্য জাতের গরুর চেয়ে তুলনামূলক বেশি মাংস পাওয়া যায়। এর স্বাদ অনেকটা দেশি জাতের গরুর মতোই। কারণ ব্রাহমা থেকে ব্রাংগুসের উদ্ভাবন। আর ব্রাহমা জাতের গরুর আদি নিবাস হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশ। ১৮৬৫ সালে এর শুক্রাণু নিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র।