নিউজ ডেস্ক: বৃহস্পতিবার এক মার্কিন ডলারের ভারতীয় মূল্য দাঁড়ায় ৭৩ দশমিক ৬৬ রুপি। চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে যা ছিল ৬৩ দশমিক ৮৮ রুপি। এ হিসেবে ১০ মাসের ব্যবধানে রুপির মান কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ। ফলে এক ডলারের দাম এখন ৭৩ দশমিক ৬৬ রুপি। যেখানে এক ডলারের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৩ দশমিক ৭৯ টাকা।
৪ অক্টোবরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি রুপিতে মান দাঁড়ায় এক টাকা ১৩ পয়সা। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ১১৩ টাকায় ১০০ রুপি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ১০০ রুপিতে মিলেছে ৮৯ টাকা। টাকার বিপরীতে রুপির এ দর এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন।
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ডলাদের বিপরীতে রুপির যে হারে অবমূল্যায়ন হয়েছে, সেই হারে টাকার অবমূল্যায়ন হয়নি। যার কারণে রুপির মান টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। ফলে ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে কিছুটা সুবিধা হলেও ভারতে আমাদের রফতানি পণ্যের দাম বেড়ে চাহিদা কমবে।
অ্যাসোসিয়েশন অব মিউচুয়াল ফান্ডস ইন ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী এনএস ভেঙ্কটেশ বলেন, তেলের উচ্চমূল্যের কারণে ভারতীয় মুদ্রা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। তবে ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী। আশা করছি, রুপির মান ৬৯-এর কাছাকাছি স্থিতিশীল হবে।
দুনিয়াময় বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে যে উথালপাথাল চলছে তাতে বাংলাদেশি টাকা ডলারের বিপরীতে বেশি ‘রেজিলিয়েন্স’ বা দৃঢ়তা দেখাতে পেরেছে বলেই রুপির তুলনায় তার দর বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা বজায় থাকলে বাংলাদেশে ভারতের রফতানি আরও বাড়বে – অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে যারা পর্যটন বা চিকিৎসার জন্য ভারতে আসেন সুবিধা হবে তাদের।
বাংলাদেশ থেকে যারা ডাক্তার দেখাতে, অস্ত্রোপচার করতে, নেহাত তাজমহল দেখতে বা আজমির শরিফে তীর্থ করতে ভারতে যাবেন তাদের জন্য এটা বড় সুখবর – কারণ টাকা বদলানোর পর তাদের হাতে নগদ রুপি এখন অনেক বেশি আসবে। ভ্রমণকারীরা।এক ডলারে আগের তুলনায় বেশি রুপি পাবেন। এতে পণ্য কেনাকাটায়ও খরচ কম লাগবে।
কোনো বাংলাদেশী যদি এ বছরের গোড়ার দিকে ভারতে শপিংয়ের জন্য ফিক্সড প্রাইসের দোকানে গিয়ে ১০ হাজার টাকায় (রুপিতে রূপান্তর করে) কিছু পণ্য ক্রয় করে থাকেন এবং এই অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে আবারো ভারত গিয়ে একই দোকান থেকে একই জিনিস একই দামে কিনতে চান, তাহলে তার ৯ হাজার ৫০ টাকা (রুপিতে রূপান্তর করে) খরচে তা সম্ভব হবে। কারণ এ সময়ের মধ্যে ভারতীয় মুদ্রা রুপি বাংলাদেশী মুদ্রা টাকার চেয়েও বেশি হারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে দর হারিয়েছে।
২০১৩-র আগস্টেও অনেকটা একই রকমভাবে রুপির বিপরীতে বাংলাদেশী টাকার দাম বেড়ে গিয়েছিল হু হু করে। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের শেষের দিকে একটা পর্যায়ে ১০০ রুপির দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ১১৫ টাকার সামান্য বেশি।