ঢাকা: গিনেস রেকর্ড অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বে জীবিত মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তি হলেন মিশরের সুলতান কসেম। তার উচ্চতা ৮ ফুট ৩ ইঞ্চি। অথচ মাত্র ২২ বছর বয়সী জিন্নাত আলীর উচ্চতা ৮ ফুট ৫ ইঞ্চি। কিন্তু ব্যাপকভাবে প্রচারে না আসায় রেকর্ডভুক্ত হয়নি কক্সবাজারের রামু উপজেলার এই বাসিন্দার নাম।
১২ বছর বয়সের পর থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকেন তিনি। ফলে স্বাভাবিক কাজকর্ম থেকেও সরে আসতে হয় তাকে। মাপ অনুযায়ী বাজারে পোশাক মেলে না। প্রতিবেলায় খাবারও লাগে এক কেজির বেশি। তিন ভাই আর এক বোনের অসচ্ছল পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তার বাবা। বাবার অসুস্থ্যতার পর সংসারের হাল ধরেন তার বড় ভাই। পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে অপুষ্টিসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হন জিন্নাত আলী। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তিনি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি।
গত সোমবার তাকে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসান ইমামের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের কেবিন ব্লকে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখান থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডি বিল্ডিংয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। তবে চিকিৎসকরা এখনও তার রোগ শনাক্ত করতে পারেননি।
তবে ৫ বছর আগে জিন্নাত আলীকে চিকিৎসা করানো হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সে সময় তার রোগটিকে জাইগানটিজম বলে শনাক্ত করা হয়। জাইগানটিজম একটি টিউমার সংক্রান্ত রোগ। শরীরের অভ্যন্তরে টিউমারের প্রভাবে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ হয়। ফলে শরীরের আকৃতি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করে আক্রান্ত স্থান থেকে টিউমারটি অপসারণ করতে পারলে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এ রোগ থেকে। এ টিউমার অপসারণে অস্ত্রোপচার করতে ৫ লাখ টাকা লাগবে বলে জানিয়েছিল চিকিৎসকরা। টাকার অভাবে ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা করাতে না পেরে ওই সময় হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। বর্তমানে জিন্নাতের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে।
চিকিৎসার জন্য গত বছর স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে আবারও ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পরে এলাকার ছেলেরা তার ছবি তুলে ফেসবুকে দিলে তা স্থানীয় এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের নজরে আসে। তিনিই তার চিকিৎসা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন। তার পরামর্শেই এই হাসপাতালে জিন্নাতকে ভর্তি করানো হয়।