মঙ্গলবার, ০৬ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:১৮:০১

‘মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ’ সিইসিকে মান্না, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়

‘মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ’ সিইসিকে মান্না, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়

নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রীর সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

ইতঃপূর্বে চিঠি দিয়ে অনুরোধের পর গতকাল সোমবার ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের সাথে সাক্ষাৎ করে একই অনুরোধ জানায়। এ সময় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সাথে নির্বাচন কমিশনের বাগি¦তণ্ডা হয়। একজন নেতা নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন আর করা যাবে না। তবে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ দাবি করেন, কোনো বাগবিতণ্ডা নয়, ভেতরে গলার আওয়াজ এমনই ছিল।

নির্বাচন ভবনে গতকাল ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল ইসির সাথে এ বৈঠক করে। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নেতত্বে প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বরকত উল্লাহ বুলু, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

অপর দিকে ইসির পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এ সময় অপর চার কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সরকারের সাথে সংলাপের ফল দেখে তফসিল ঘোষণার দাবি জানান ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এ ছাড়া নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন ও ইভিএম ব্যবহার থেকে বিরত থাকার দাবি জানানো হয়। ঐক্যফ্রন্টের এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস দেয়নি ইসি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইসি জানিয়েছে, পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জানান আলোচনা ভালো হলেও তাদের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি অব্যাহত রয়েছে।

বৈঠক সত্রে জানা গেছে, বৈঠকের একপর্যায়ে ইসির ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা থাকা না থাকা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।

ইসির ওপর আস্থার বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, তারা ইসির ওপর অনাস্থা জানাতে আসেননি। তবে এই নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা নেই।

এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের মধ্যেই আস্থা নেই। নেতারা শুধু বড় বড় কথা বলেন...

সিইসির এমন বক্তব্য শেষ করতে না দিয়েই মান্না বলেন, মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ।

বৈঠকে তিন সিটি নির্বাচনে ইসির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেন, দেশের মানুষ দেখেছে রাজশাহী সিটিতে কিভাবে নির্বাচন হয়েছে। একটি কেন্দ্রেও বিএনপির এজেন্টরা ঢুকতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ উত্থাপন করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়েও পাল্টাপাল্টি কথা হয় ইসি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, আইনে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে সেনা মোতায়েনের সুযোগ নেই। অতীতে যেভাবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন হয়েছে, সেভাবে হয়তো হতে পারে। কিন্তু সেটা তফসিল ঘোষণার পর কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, ভোটারদের আস্থা অর্জনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন রয়েছে। দুর্বৃত্ত দমনের জন্য সেনাবাহিনীকে গ্রেফতারের ক্ষমতাও দেয়া প্রয়োজন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে