নিউজ ডেস্ক: প্রশাসন বারণ করায় নির্বাচনি প্রচার কাজে বের হতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা-৯ আসনের বিএনপি প্রার্থী আফরোজা আব্বাস। তিনি বলেছেন, প্রশাসন থেকে আমাকে বারণ করা হয়েছে। সে কারণে আমি আজ (মঙ্গলবার) প্রচারে নামছি না। তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে ওই এলাকায় যেতে নিষেধ করেছে।’
মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে পেয়ে নিরপেক্ষভাবে নিরাপত্তা নিয়েই কাজ করতে পারবো। কিন্তু এখন দেখতেছি প্রশাসনই উল্টো মানা করে দিচ্ছে আপনারা (প্রচারে) আসবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন বের হচ্ছি, প্রতিদিন আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছি। প্রতিদিন আমার কর্মসূচিগুলো সম্পর্কে থানা এবং নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে প্রচারে অংশ নিচ্ছি। প্রতিদিন আমি হামলার শিকার হচ্ছি। আমাকে সেফ করতে গিয়ে আমার শত শত নেতাকর্মী আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। আমি আজকেও কর্মসূচির কথা সবুজবাগ থানা ও নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমাকে জানিয়েছেন কোনও দায়িত্ব নিতে পারবেন না। ওই এলাকায় আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী যাবেন, সে কারণে তারা আমাকে ওই এলাকায় যেতে নিষেধ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর খিলগাঁও থানায় ফোন করলাম। তারাও যুবলীগের মিছিলের কথা বলে বারণ করলো। প্রশাসন যদি আমার নিরাপত্তা দিতে না পারে, কীভাবে প্রচারণা করবো? কারণ, প্রতিটি জীবনের তো মূল্য আছে।’
আফরোজা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, ‘গণসংযোগ করে আসার পর প্রতিদিন আমার বাসাটি একটি হাসপাতালে পরিণত হয়। আমি চিকিৎসা দিতে পারি না। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়।’
‘তারা বারণ করার পর আজ যদি আমি বের হতাম, তাহলে দেখা যেত প্রশাসনই আমার ওপর হামলা করেছে। তাই সেই দায়িত্ব আমি নিতে চাই না’, বললেন ধানের শীষের এই প্রার্থী।
আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘আমরা পোস্টার লাগাতে পারছি না। ব্যানার লাগাতে পারছি না। গণসংযোগে যেতে পারছি না। কোনও ব্যাপার না। জণগণের মনের মধ্যে আমাদের পোস্টার, ব্যানার, গণসংযোগ আছে। আমরা শুধু চাই ৩০ তারিখে যাতে সবাইকে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়। তারা যাতে ভোট দিতে পারে এবং ভোট রক্ষা করতে পারে।’
প্রশাসন বারণ করলে আপনি বের হবেন না, গণমাধ্যম কর্মীদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজ আমি তাদের (প্রশাসন) সুযোগ দিলাম। আমি বের হবো। আমি পুলিশকে বলেছি—আপনারাই আমাকে প্রোগ্রাম দেন, আমি কখন কোথায় যাবো। কিন্তু তাও দিচ্ছে না।’
সারা দেশে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার ও মির্জা আব্বাসের ওপর সবচেয়ে বেশি হামলা হচ্ছে। আমাদের এমন কোনও প্রার্থী নেই—যার ওপরে হামলা হয়নি। গতকালকে (সোমবার) সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটে শেষ পর্যন্ত থাকার আমার দৃঢ়তা আছে। নির্বাচন কমিশনে অনেক অভিযোগ দিয়েছি। আমি বলেছি—আমি একজন নারী প্রার্থী। অন্তত আমার নিরাপত্তাটা দেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আমাকে কোনও নিরাপত্তা দেয়নি। গত পরশু (রবিবার) আমার ওপর সবুজবাগ এলাকায় হামলা হয়েছে। আমার দুইপাশে চারজন মহিলা পুলিশ ছিল। কিন্তু যখন হামলাটা হলো আমি কাউকে খুঁজে পাইনি। আমার নেতাকর্মীরা আমাকে আগলে রেখেছেন।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও নিজের চোখে তো সেনাবাহিনী দেখিনি। আশায় আশায় ছিলাম। কিন্তু এ পর্যন্ত খুব একটা ভালো রেজাল্ট পাইনি, আরও আক্রমণ বেড়ে গেলো। আশায় আছি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী আমাদের নিরাপত্তা দেবে এবং বাকি দিনগুলোতে কাজের সুযোগ দেবে।’