ঢাকা: মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছ থেকে বোনের মোবাইল হ্যান্ডসেটটি ট্র্যাক করিয়েছেন তার বড় ভাই সাঈদুল ইসলাম সানি। বুধবার রাত সোয়া ১০টায় বোনের সর্বশেষ লোকেশন ছিল পুরান ঢাকার বেগম বাজারে; যা পুড়ে যাওয়া চুড়িহাট্টা মোড় থেকে মাত্র ৩৫০ মিটার দূরত্বে।
আগুনে আদরের ছোট বোনটি নিহত হয়েছে কি না সেই শঙ্কা থেকেই শুক্রবার সকালে চুড়িহাট্টা মোড়ে নিখোঁজের তালিকায় তার নাম লেখান সানি।
নিখোঁজ তরুণীর নাম ফাতেমা তুজ জোহরা। বয়স ২১। তিনি গার্হস্হ্য অর্থনীতি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার শিল্পকলা একাডেমিতে একটি কবিতা আবৃতির অনুষ্ঠান শেষে লালবাগের পোস্তগোলায় নিজের বাড়ি ফিরছিলেন ফাতেমা।
রাত বেশি হওয়ায় ১০টা ৪ মিনিটে পরিবার থেকে তাকে ফোন দেয়া হয়। ফোনে ফাতেমা জানান, তিনি কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবেন। রাতে টেলিভিশনে আগুনের সংবাদ দেখে ফাতেমাকে ফোন দেন তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যায়নি।
ফাতেমার ভাই সাঈদুল ইসলাম সানি জানান, ফাতেমার সঙ্গে যখন কথা হয় তখন সে মৎস ভবনের কাছে ছিল। এরপর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা লালবাগ থানায় একটি জিডি করেছি। ডিবি ও র্যাবের কাছে অনুসন্ধান করেছি। ডিবির একটি টিম অনুসন্ধান করে দেখে, ১০টা ১৬ মিনিটে ফাতেমার ফোনের লোকেশন ছিল বেগম বাজারে। এ তথ্য জানার পর থেকে আমি রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়েছি। অনেকবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে গিয়েছি। আহতদের তালিকায়ও সে নেই। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। আমার বোনের সঙ্গে আরও একজন বন্ধু ছিল, তার সর্বশেষ লোকেশন ছিল উর্দু রোড যা চুড়িহাট্টা থেকে ১০০ মিটার দূরে।
বুধবার রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে আগুনের সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট ৬৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত ও দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪১ জন। এদের মধ্যে দু’জনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।