বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯, ০১:২৮:১০

রাজধানীতে এক ভিখারিনীর বাড়িতে ১৩ বস্তা টাকা!

রাজধানীতে এক ভিখারিনীর বাড়িতে ১৩ বস্তা টাকা!

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর দক্ষিণ মাণ্ডা এলাকায় গতকাল বুধবার সকাল থেকেই মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এলাকার মাদ্রাসা রোডে জাকিরের বাড়িতে ‘গুপ্তধন’ উঠেছে। ফলে সকাল থেকেই ওই বাসার চারপাশে ভিড় করে অসংখ্য কৌতূহলী মানুষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ।

তারা সেখানে গিয়ে সাজেদা বেগম নামে ৭২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার ঘর থেকে সত্যিই ১৩টি বস্তায় ভর্তি ৭৬ হাজার টাকা এবং ছোট ছোট আরও অনেক ব্যাগে থাকা ৮৮ কেজি বিভিন্ন ধরনের কয়েন উদ্ধার করে। পরে এসব টাকা ও কয়েন মুগদা থানা নিজেদের হেফাজতে নেয়।

বাসার মালিক জাকির বলেন, বাসায় ওঠার কয়েকদিন পর থেকে আমেনাকে আর দেখা যাচ্ছিল না। এদিকে অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন সাজেদা বেগমও। প্রতিদিনই রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঘর ভরিয়ে ফেলেন তিনি।

একপর্যায়ে ঘরে বস্তার স্তূপ রেখে বারান্দায় ঘুমানো শুরু করেন ওই বৃদ্ধা। এক মাস ১০ দিন পর আমি তার কাছে ঘর ভাড়া চাই। রাতে এসে দেবেন বলে সেই যে তিনি গেলেন আর এলেন না।এভাবে কাটে আরও প্রায় দুই মাস। ভেবেছিলাম ভাড়া জোগাড় করতে না পারায় তারা আর আসবেন না। অন্য কোথাও উঠেছেন।

তাই স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে সাজেদা বেগমের ঘর থেকে বস্তার স্তূপ ও নষ্ট কাপড় সরিয়ে সেগুলো বাইরের বারান্দায় এনে রেখেছিলাম। সেগুলো বিক্রি করতে এলাকার কয়েকজন ভাঙারি ব্যবসায়ীকে ডেকে আনি। তারা কয়েকটি বস্তা বাইরে আনতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। কারণ ছোট ছোট ব্যাগগুলোর ছিল প্রচন্ড ভারী। পরে কৌতূহলবশত কয়েকটি ছোট ব্যাগ খুললে তার ভেতর থেকে প্রচুর কয়েন বেরিয়ে আসে।

বড় বস্তাগুলো খুলেও দেখা যায় তাতে রাশি রাশি টাকা ভরা। এরপর একে একে বস্তা ও কাপড়ের ভাঁজে পাওয়া যায় ৭৬ হাজার টাকা (এক টাকা, দুই টাকা থেকে শুরু করে ১০০-৫০০ টাকার নোট) ও ৮৮ কেজি টাকার কয়েন (চার আনা থেকে শুরু করে ৫ টাকা)।

বৃদ্ধার মেয়ে আমেনা বলেন, তার বাবা মো.সোবহান বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। তার আরও দুই ভাইবোন ছিল। কিন্তু তারাও মারা গেছে। তাই পেটের দায়ে গ্রামের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা দড়িহাসরাস থেকে তারা ঢাকায় আসে। কোনো কাজ না পেয়ে মা-মেয়ে ভিক্ষা করে দিন চালাতেন।সেই থেকে ভিক্ষার টাকা বস্তায়, কাপড়ের ভাঁজে রাখতে শুরু করেন তার মা। টাকা জমানো তার নেশা।

বৃদ্ধা সাজেদা বলেন,তাদের অবর্তমানে ঘরের তালা ভেঙে টাকার বস্তা, মালপত্র বের করা বাড়িওয়ালার উচিত হয়নি।তিনি আর বলেন বস্তায় কত টাকা ছিল তা তিনি জানেন না।

এ বিষয়ে মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার শাহা বলেন, বস্তা থেকে উদ্ধার করা টাকা মা মেয়ের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে