নিউজ ডেস্ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের কক্ষে নবজাতক প্রসব করার ঘটনা ঘটেছে। এসময় তালাবন্ধ ট্রাঙ্ক থেকে নবজাতক উদ্ধার করা হয়েছে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হল প্রভোস্টের দাবি, সবসময় চাঁদর মুড়ি দিয়ে থাকায় মেয়েটি সন্তানসম্ভবা হওয়ার খবর তাদের নজরে আসেনি।
শনিবার (১৬ মার্চ) বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে গোপনে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন জাবির উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রী। পরে নবজাতকটিকে নিজের ট্র্যাংকে তালা মেরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তিনি। এরপর ট্র্যাংক থেকে কান্নার শব্দ এলে তালা ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করে একই হাসপাতালে নিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রাত পৌনে ১০টার দিকে হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে নবজাতকের মা আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে ওই ছাত্রী নবজাতক প্রসব করে কাউকে না জানিয়ে নিজের ট্র্যাংকে লুকিয়ে রাখেন। তার রুমমেট রুমে এলে শুধু প্রসব বেদনার কথা জানান। ছাত্রীরা বিষয়টি হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে জানান। চিকিৎসাকেন্দ্রের নার্স এসে তাকে এনাম মেডিকেলে নিতে বললে সিকগার্লদের সহায়তায় ওই হাসপাতালে নেয়া হয়।
পরে ওই কক্ষ থেকে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান ছাত্রীরা। খোঁজাখুঁজি করে ট্র্যাংকের তালা ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করে হল প্রশাসন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়ার সময় নবজাতকের শরীর নীলচে আকার ধারণ করে। পরে শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ‘বাচ্চাকে যখন মেডিকেলে নিয়ে আসা হয় তখন তার শরীর সম্পূর্ণ নীল রং ধারণ করেছিল। পরে তাকে অক্সিজেন দিয়ে স্বাভাবিক করে এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।’
ওই হলের প্রাধ্যক্ষ জানান, ‘ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে হলে যাই। ছাত্রীরা যখন বলছিলো ঘর থেকে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তখন ৪২৬ নম্বর রুমে গিয়ে ট্র্যাংকের তালা ভেঙে বাচ্চাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে যাই। রাত পৌনে ১০টার দিকে বাচ্চাটি মারা যায়। তবে বাচ্চার মা ওই ছাত্রী আশঙ্কামুক্ত।’
প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘তথ্য গোপন করে মেয়েটি অপরাধ করেছে। এই ঘটনা তদন্তের জন্য হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক লাবিবা খাতুন তানিয়াকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি।