৪ জনের যাবজ্জীবন, ৭জনকে দশ বছরের কারাদণ্ড
অ্যাড. এমদাদুল হক লাল, আদালত প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরার মুছাপুরে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের শিশুসহ ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় দোষী স্বাব্যস্ত করে ৪জনকে যাবজ্জীবনএবং ৭ জনকে ১০বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
সোমবার ঢাকা দ্রুত বিচার-৩ এর বিচারক সাঈদ আহম্মেদ এ রায় প্রদান করেন। রায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত আসামিরা হলেন, আল আমিন (পলাতক), শাহীন মিয়া (পলাতক), কালা মিয়া ওরফে কালাচান ডাকাত (পলাতক) ও অলেখ ওরফে অলেখ চান ওরফে অলেছ চোরা। দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মামলার ৭বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত আসামিরা হলেন, জামাল ওরফে ল্যাংড়া জামাল, আনোয়ার হোসেন আনার, মিষ্ঠু মিয়া ওরফে মোবারক আলী, তারেক মিয়া, জিল্লু মিয়া,কালা মিয়া ওরফে জামাল মিয়া ও মোবারক।আদালত তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার জরিমানাও করেছেন ।অনাদায়ে ৬ মাস দণ্ড ভোগ করতে হবে তাদের।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলা বাদী শামসুদ্দিন মোল্লার সথে আসামি আল-আমিনের আগে থেকে জমি-জিরাত নিয়ে বিরোধ চলছিল। বাদীর পুরাতন বসতবাড়ি আসামি আল আমিনকে না দিয়ে তার ভাইয়ের কাছে বিক্রি করে দেয়ায় বিরোধ আরো বাড়ে। আসামি আল আমিনের কাঁঠাল গাছের ডাল আসামিদের বাসায় টিনের ওপর এসে পড়ে। ঝড় বাতাসে টিনে শব্দ করতে থাকলে তাদের ঘুমাতে সমস্যা হয়। এ নিয়ে অতীতে দু’পক্ষে ঝগড়া বিবাদ হয়। এক সময় বিবাদ গড়ায় মারামারিতে।
গত ২০০৬ সালের ২৭ নভেম্বর রায়পুরা থানাধীন মুসাপুর গ্রামে আসামি আল আমিন পূর্বপরিকল্পিতভাবে গভীর রাতে অন্য আসামিদের নিয়ে জানালার গ্রিল ভেঙে রুমে ঢোকেন। আসামি রনি মিয়া (১৪) প্রথমে রুমে ঢুকে দরজা খুলে দেন। পরে অন্য আসামিরা রুমে ঢুকে রোমানা ও রুনাকে ঘুমন্ত অবস্থায় কিরিচ দিয়ে কপালে ও মাথায় আঘাত করেন। ঘটনাস্থলে রোমানা মারা যায় এবং রুনা সাত দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়। ঘরে থাকা ভিকটিম রুমানার শিশু সন্তান অর্নব (২১ দিন) ও ভিকটিম রুনার শিশু কন্যা বর্ণকে (৯ মাস) আসামিরা মাথায় চাপাতি দিয়ে আঘাত ও মাথা থেতলে দিলে ঘটনাস্থলে তারা মারা যায়।কাজের মেয়ে তাসলিমা মারাতœক আহত অব¯হায় বেছেঁ আছে।
এ ঘটনায় রুমানা ও রুনার বাবা মো.শামসুদ্দিন মোল্লা বাদী হয়ে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করেন।
গত ২০১১ সালের ৪ জুন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক সুলতান মাহমুদ দন্ডিত আসামি আল-আমিনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ৬১ সাক্ষীর মধ্যে ২৯ জন সাক্ষ্য দেন। আসামি রনি মিয়া (১৪) অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তার বিচার নরসিংদী কিশোর আদালতে বিচারাধীন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান। অপরদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সালেহা বেগম শিউল, জসিম উদ্দিন ও মাহাবুব আহম্মেদ। আসামি রনি মিয়া (১৪) ও আনোয়ার হোসেন আনার দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানিবন্দি প্রদান করেন।
১৪ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস
�