নিউজ ডেস্ক: কেমন দিন কাটছে ‘পাইপ বালক’ নাঈমের? বড় হয়ে একজন আদর্শ পুলিশ অফিসারের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে কতদূরই বা এগিয়েছে সে? এমন নানা প্রশ্ন নিয়ে মহাখালীর করাইল বস্তিতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এখনো উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে নাঈম। প্রতিদিন সেই স্বপ্নের শক্ত গাঁথুনির চেষ্টাতে কোনো ছেদ পড়তে দেয় না সে। আর স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে জোর কদমে এগিয়েও যেতে চায় নাঈম।
গত ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের দিন ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপের ছিদ্র পলিথিন জড়িয়ে বন্ধ করার প্রাণান্তকর চেষ্টার নাঈমের সেই ছবি নজর কেড়েছে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। মিডিয়াতেও শুরু হয় উৎসাহব্যঞ্জক আলোচনা। চলে বেশ কয়েক দিন। এরই মধ্যে আমেরিকা এক প্রবাসী নাঈমের পুলিশ অফিসার হওয়ার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার লেখাপড়ার খরচ বাবদ পাঁচ হাজার ডলার অনুদান হিসেবে দেয়ারও ঘোষণা দেন। কিন্তু এরই মধ্যে নাঈমের ভুলে রাজনৈতিক একটি বক্তব্যের কারণে ইতিবাচক আলোচনায় ছেদ পড়ে। প্রবাসী ব্যক্তি তার অনুদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে দাঁড়ান। আশাহত হন নাঈমের মা নাজমা বেগম। কিন্তু ছেলের আশা আর স্বপ্ন কে বাস্তবে রূপ দিতে গায়ে গতরে এখনো পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি।
ছেলের একটি ভুল বক্তব্যকে রাজনীতির কোনো পাল্লাতেই উঠাতে চান না মা নাজমা বেগম। এই প্রতিবেদককে তিনি জানালেন, আমার ছেলে ছোট মানুষ। রাজনীতি বিষয়ে সে কি-ই-বা বুঝে। তারপরেও ভুলে একটি বক্তব্য নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছে। আমি তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। তারপরও বলবো আপনারা আমার ছেলের ভবিষ্যতকে বাধাগ্রস্ত করবেন না। অনেকে আমার ছেলের জন্য অনুদান দিয়েছেন। অনেকে দিতে চেয়েছেন। আমার ছেলের পড়ালেখার ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি একটি অফিসে রান্নার কাজ করি। কোনোমতে এক ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে বস্তিতে একটি খুপরি ঘরে কোনোমতে দিনাতিপাত করি। আমার স্বামী পাঁচ বছর আগেই আমার দুই সন্তানসহ আমাকে ফেলে অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছেন। কোন খোঁজ খবরও নেয় না।
তিনি বলেন, আমার ছেলে নাঈম ও মেয়ে কাজল করাইল বস্তির বড় নৌকা ঘাট এলাকার আরবান স্লাম আনন্দ স্কুলে পঞ্চম ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। প্রতি মাসে দুই সন্তানের পেছনে অনেক খরচ। আমি একা সামলাতে পারি না। তাই সমাজের বিত্তশালীরা যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে আমার দুই সন্তান মানুষের মতো মানুষ হবে। আমি সবার দোয়া আর সহযোগিতাও চাই ।