ঢাকা : সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় 'ছেলে'ধরা' সন্দেহে গণপি'টুনিতে এক নারী নি'হত হওয়ার পাঁচ দিন পর তাঁর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। নিহতের নাম সালমা বেগম (৪০)। তিনি ‘ছেলে'ধরা’ ছিলেন না।
নিজের সন্তানদের দেখতে এসে গুজবে বলি হলেন সালমা। বুধবার সাভার ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এমারত হোসেন নি'হতের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সালমা মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার মুসলিমাবাদ গ্রামের বিল্লাল বেপারীর মেয়ে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সাভার চামড়া শিল্পনগরী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক এমারত হোসেন নি'হতের পরিবারের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নি'হত সালমা বেগমের চাচা কোহিনূর ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাতিজি সালমার সঙ্গে সাভারের ইমান্দিপুর এলাকার সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মিজানুরের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ১০-১২ বছর আগে মিজানুর ভাতিজিকে ডিভোর্স দিয়ে আবারও বিয়ে করে।
তিনি বলেন, সালমা ও মিজানুরের ঘরে তিন মেয়ে আছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর তিন মেয়ে মিতা, মনিকা ও মিসকাতকে নিজের কাছেই রেখে দেয় মিজানুর। ডিভোর্সের পর থেকে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার মুসলিমাবাদ গ্রামে বাবার বাসায় থাকতো সালমা। মাঝে মধ্যে মেয়েদের দেখতে মিজানুরের বাড়ি যেত। সাভারে এলে ব্যাংক কলোনি এলাকায় আমার বাড়িতেও আসতো সালমা।
কোহিনূর ইসলাম বলেন, মেয়েদের দেখতে সাভারের ইমান্দিপুর এলাকায় গেলে সালমাকে মার'ধর করতো মিজানুরের দ্বিতীয় স্ত্রী ও স্বজনরা। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে আগেও সাভার মডেল থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ২০-২৫ দিন আগে মিজানুর বিদেশ থেকে সাভারের ইমান্দিপুরের নিজ বাড়ি আসে। ২০ জুলাই (শনিবার) ভোরে বাবার বাড়ি থেকে ইমান্দিপুরে মিজানুরের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয় সালমা।
সোমবার বিকেলে সালমাকে গণপি'টুনি দিয়ে হ'ত্যা করা হয়। এরই মধ্যে বিষয়টি পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি আমরা। মিজানুর ও তার স্বজনরা সালমাকে ‘ছেলে'ধরা’ গুজবে গণপি'টুনি দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হ'ত্যা করেছে।
নি'হতের পরিবারের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক এমারত হোসেন জানান, তেঁতুলঝোড়া এলাকায় গণপি'টুনিতে নিহ'ত নারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহ'ত সালমা নামে ওই নারী মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি ২০ জুলাই (শনিবার) দুপুরে তেঁতুলঝোড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিতেই গিয়েছিলেন।
তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি তার জানা নেই জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এমারত আরো বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নি'হতের স্বামী মিজানুরের বাড়ির দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ায় এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা থাকার কথা নয়।