নিউজ ডেস্ক : মৃ'ত্যুর মানে বুঝতে একটা বয়স লাগে। আর মৃ'ত্যু কোনটা মেনে নেওয়া যায়, কোনটা যায় না—সেটা বোঝা আরো খানিকটা কঠিন। চার বছরের তুবা না বুঝতে পারছে মায়ের মৃ'ত্যুর মানে; না বুঝতে পারছে মায়ের মৃত্যু'র গ্রহণযোগ্যতা। ফলে মৃ'ত্যুর মানেটা এখন পর্যন্ত তার কাছে শুধুই মায়ের শারীরিক অনুপস্থিতিতে সীমাবদ্ধ। তাই তো সে এ-ঘর ও-ঘর পাক খাচ্ছে আর প্রশ্ন তুলছে, ‘মা কোথায় গেছে, মামণি আমাকে খাওয়াবে না? ঘুম পাড়িয়ে দেবে না?’
রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধ'রা সন্দেহে গণপি'টুনিতে নিহত তাছলিমা বেগমের মেয়ে সাবরিনা ইয়াসমীন মাহিরা তুবা থেকে থেকে এখন এ রকমই নানা প্রশ্ন করছে স্বজনদের। স্বজনদের পক্ষে এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। তাঁরা সহজ যেটা সেটাই করছে—মুখ লুকিয়ে কাঁদছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মহাখালীর বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তুবাকে সবাই স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। তুবার বড় বন্ধু এখন তার মামা সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু। তিনি বলেন, “ওর কষ্ট আর সহ্য হচ্ছে না। কিভাবে এই ছোট্ট শিশুকে বোঝাব, ওর মা আর কখনো ফিরবে না। সারা দিন বাসার সবাই ওর ইচ্ছা পূরণে ব্যস্ত থাকে। তবু ওর মেজাজ ঠিক থাকছে না। সারাক্ষণ শুধু মাকেই খোঁজে। ওকে বোঝানোর জন্য আমাদের বলতে হচ্ছে, ‘তোমার মা নিচে গেছে, তোমার জন্য চিপস আনবে।’ কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হয় না; পাল্টা বলে বসে, ‘তাহলে মাকে ফোন দাও।’ এরপর বায়না ধরে, ‘ফোনটা আমাকে দাও, আমি মায়ের সঙ্গে কথা বলব।’”
গত রাতে ওই বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বড় ভাই তাহসীন আল মাহিরের সঙ্গে তুবা এ-ঘরে ও-ঘরে যাচ্ছে। নাসির উদ্দিন টিটু বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাছলিমার দুই সন্তানকে আমাদের কাছে রেখে পড়াশোনা করাব।’