নিউজ ডেস্ক : বিগত বছরগুলোতে নামাজের পরপরই রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীর ভিড় দেখা গেলেও এবার তাদের অনেকেরই দেখা মেলেনি। ৮০ হাজার টাকায় কেনা গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ২’শ টাকায়। ১ লাখ টাকার উপরে গরুর চামড়ার দাম ৩’শ থেকে ৫’শ টাকা। আর খাসির চামড়ার দাম নেই বললেই চলে। একটি খাসির চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ টাকায়। তাই অনেকই মাদ্রাসা ও এতিমখানার দান করে দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ১০-১২ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কমদামে বিক্রি হচ্ছে পশুর চামড়া। অথচ সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া দাম অনুযায়ী, ঢাকায় কোরবানির গরুর প্রতিটি ২০ থেকে ৩৫ বর্গফুট চামড়া লবণ দেওয়ার পরে ৯০০ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকায় কেনার কথা ট্যানারি মালিকদের।
রাজধানীর মানিক নগর এলাকায় গতবছর কাঁচা চামড়া যারা কিনেছিলেন, তাদের একজন আনোয়ার হোসেন বলেন, চামড়া কিনে কী করবো। বাজার খুব খারাপ। ব্যবসায়ীরা বলে দিয়েছে সরকারি দামে চামড়া না কিনতে। তাই এবার চামড়া কিনছি না। অবশ্য ২০১৮ সালের কোরবানির মতো এবারও চামড়া কিনে যাতে বিপদে না পড়েন, সেজন্য মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের আগেভাগেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চামড়াখাত সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ মৌসুমি বলেন, ‘মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যেন চিন্তা ভাবনা করে এবার চামড়া কেনেন। কারণ, আমরা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরাসরি চামড়া সংগ্রহ করছি না। তবে যারা লবণ দেবেন, তাদের কাছ থেকে আমরা চামড়া নেবো।
এ প্রসঙ্গে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের হাতে এই মুহূর্তে সব চামড়া কেনার মতো টাকা নেই। ফলে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এবার সব চামড়া হয়ত আমরা কিনতেই পারবো না। তিনি মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে বলেন, যেসব মৌসুমী ব্যবসায়ী চামড়া কিনবেন, তারা যেন ঈদের দিন চামড়া বিক্রি করার কথা মাথায় না রাখেন। তারা যেন চামড়ায় ভালোভাবে লবণ দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে চামড়া কেনেন।
প্রসঙ্গত, এবার গরুর কাঁচা চামড়ার দাম ঢাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সারাদেশে খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ১৩ থেকে ১৫ টাকা।