বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০১:২৬:২১

ইংলিশ রোডে টাকা রাখার জন্য 'ভল্ট' বানানোর অর্ডার দিয়েই ধরা খেলেন এনামুল

ইংলিশ রোডে টাকা রাখার জন্য 'ভল্ট' বানানোর অর্ডার দিয়েই ধরা খেলেন এনামুল

ঢাকা: ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ার হোল্ডার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক ক্যাসিনোর আয় থেকে পাওয়া টাকা বিশেষভাবে বানানো ৫টি ভল্টে রাখতেন। সূত্রাপুরের বনিয়ানগরের নিজ বাড়িতে তিনি ক্যাসিনোর টাকা রাখার জন্য তিনটি ভল্ট বানান তিনি। তার অপর দুইটির মধ্যে একটি ভল্ট ছিল কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের নারিন্দার বাসায়, অন্যটি ছিল র বন্ধু হারুন সরদারের বাসায়।

ক্যাসিনো থেকে পাওয়া টাকায় এনামুল হক যে এত বিত্তবৈভবের মালিক, তা তার আত্মীয় স্বজনের কাছেও ছিল অজানা। ভল্টের ভেতরে নগদ টাকা রাখার জায়গা না থাকায় স্বর্ণ কিনতেন তিনি। তার বাসার ভল্টে জায়গা সংকীর্ণতায় তিনি স্বর্ণালঙ্কার কিনতেন। এই ক্লাব ব্যবসায়ীর বাসার ভল্ট থেকে ৭২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে র‌্যাব।

ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোর অবৈধ উপার্জনের কোটি কোটি টাকা এনামুল হক ব্যাংকে জমা রাখার ঝুকি নেননি। নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিরাপদে রাখার জন্য পুরান ঢাকার ইংলিশ রোডে অর্ডার দিয়ে ৫টি ভল্ট বানান। নিরাপত্তার জন্য এই ভল্ট বানানোর অর্ডারই তার জীবনে কাল ডেকে নিয়ে এসেছে। অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো র‌্যাবের গোয়েন্দারা ভল্ট বানানোর অর্ডারের সূত্র ধরেই এনামুল অগাধ বিত্ত-বৈভবের সন্ধান পান।

এনামুলের বাসায় সোমবার মধ্যরাত থেকে র‍্যাব-৩ অভিযান চালায়। অভিযান শেষে মঙ্গলবার দুপুরে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সফিউল্লাহ বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, সূত্রাপুরের বানিয়ানগরে এনামুলের ছয়তলায় বাসার দোতলা ও পাঁচতলা থেকে তিনটি টাকা বোঝাই ভল্ট পাওয়া গেছে। অভিযান শেষে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভল্টগুলো খোলা হয়। সেখান থেকে তারা এক কোটি ৫ লাখ টাকা ও ৭২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছেন। এ ছাড়া পাঁচটি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে র‍্যাব। এনামুলের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের নারিন্দার লালমোহন রোডের ৮৩/১ বাসায় অভিযান চালিয়ে সেখানে উদ্ধার করা হয়েছে এনামুলের আরেকটি ভল্ট । সেই ভল্টে পাওয়া গেছে ২ কোটি টাকা। এনামুলের বন্ধু হারুন সরদারের বাসায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় অপর ভল্টটি। সেখানেও রাখা ছিল ২ কোটি টাকা।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, কয়েকদিন আগে এখানকার ইংলিশ রোডে ৫টি ভল্ট বানানোর অর্ডার দেন এনামুল হক ও রুপন ভূঁইয়া। সেই সূত্রে জানতে পারি তাদের বাসায় তিনটি ভল্ট রয়েছে। বাকি দুটি বাসায় অভিযান চালিয়ে দুটি ভল্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

এক সপ্তাহ আগে এনামুল হক থাইল্যান্ড পালিয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এনামুলের ভাই সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুপন ভূইয়াও দেশেই কোথাও আত্মগোপন তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তারা দু’ভাই-ই ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত।।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে