নিউজ ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৩০ নভেম্বর (শনিবার)। ২০১৭ সালের এই দিনে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আনিসুল হক। ডিএনসিসির মেয়র হিসেবে মাত্র দুই বছর দুই মাস ২৪ দিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মানুষের জন্যে কাজ করতে ইচ্ছাটাই যে সবচেয়ে দরকারি তা প্রমাণ করেছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হক। সুন্দর করে কথা বলা এই মানুষটি কাজ দিয়েও জয় করেছিলেন ঢাকাবাসীর মন।
প্রবল বাধার মুখেও অটল থেকে তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা সড়কটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে পেরেছিলেন আনিসুল হক। প্রশস্ত মনোরম এই সড়কটি বলে দেয় কতটা দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন তিনি। তবে তিনি প্রয়াত হওয়ার পর মাঝে মাঝেই সড়কটি চলে যায় আগের অবস্থায়।
আনিসুল হকের পরিকল্পনায় করা এই ইউটার্নগুলো যে কতটা কাজের তার প্রমাণ পাচ্ছেন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। সাতরাস্তা থেকে আব্দুল্লাপুর পর্যন্ত এমন ১২ টি ইউটার্ন করার কথা ছিল। আক্ষেপের বিষয় তার মৃত্যুর পর এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটির কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
আনিসুল হক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন ২০১৫ সালের ৬ মে। ২০১৭ সালের আগষ্টে গুরুতর অসুস্থ হয়ে লন্ডনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাড়ে তিন মাসের মাথায় মারা যান। সব মিলিয়ে মেয়র হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র দুই বছর। এ সময়েই নগরবাসীর মধ্যে বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়া রাজধানী নিয়ে বিরাট আশার সঞ্চার করেছিলেন।
যারা তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তারা জানেন জনগণের কাজে কতটা আন্তরিক ছিলেন আনিসুল হক। উত্তর সিটির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা তার সাথে কাজ করে অনেক আনন্দ পেয়েছি। তিনি টিমওয়ার্ক করতেন। কাজকে ভালোবাসতেন।
শুধু কি নগরীর মেয়র হিসেবে। আনিসুল হক যেখানে যে দায়িত্বই পেয়েছেন সেখানেই দেখিয়েছেন তার ক্যারিশমা। নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, যে ক্ষেত্রেই তিনি তার ভূমিকা রাখার সুযোগ পেয়েছেন সেখানেই তার অসাধারণ নেতুত্বের স্বাক্ষর পেয়েছি। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ, তিনি যে দৃষ্টান্তগুলো রেখে গেছেন, বর্তমান মেয়ররা আদর্শ পেয়ে গেছেন। তারা এ দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবেন, আরও এগিয়ে যাবেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আনিসুল হকের উত্তরসূরি বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, জনকল্যাণে তিনি যতগুলো প্রজেক্ট নিয়েছেন প্রত্যেকটিকে আমি গুরুত্ব দিয়েছি। আমি মনে করি আমাদের একজন সহকর্মী হিসেবে তিনি যে জনহিতকর কাজগুলো করে গেছেন সেটিকে আমরা মূল্যায়ন করে সেগুলোকে আমরা চালিয়ে যাব।
১৯৫২ সালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জন্ম নেন আনিসুল হক। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ৬৫ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান। অল্প সময়ের কাজেই ঢাকাবাসী একজন ব্যতিক্রমী মেয়র হিসেবে আনিসুল হককে মনে রাখবে বহুদিন।