রেজোয়ান বিশ্বাস, ঢাকা থেকে : ''এই ডাইনি আমার জীবনটাকে শেষ করে দিয়েছে। এই ডাইনির জন্যই আজকে আমার ক'রু'ণ দশা। আজকে ১২ তারিখ। আমার পরিবারকে আজকে আমি চিরতরে মুক্তি দিব। আমাকে পাওয়া যাবে রেললাইনে।''
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার প্রেমবাগান রোডের ৮৩৮ নম্বর 'আশ্রয়' বাড়ির চারতলার ফ্ল্যাটের (বাসা) ভাড়াটিয়া বিটিসিএলের সহকারী ব্যবস্থাপক রকিব উদ্দিন আহম্মেদের বাসা থেকে গত শনিবার একটি নোটবুক উ'দ্ধা'র করেছে পুলিশ। তাতে লেখা রয়েছে এই কথাগুলো। নোটবুকে এসব তথ্যের পাশাপাশি একটি মোবাইল ফোন নম্বর পাওয়া যায়।
পরে নম্বরটিতে কল করলে তা ধরেন বাড়িটির মালিক মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। পুলিশ ওই নারীকে এ বিষয়ে গত শনিবার রাতে ব্যা'প'ক জি'জ্ঞা'সাবাদ করে। তবে জি'জ্ঞা'সাবাদে তিনি বলেছেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। রকিব নোটবুকটি অন্য উদ্দেশ্যে লিখেছেন কি না তাও খ'তিয়ে দেখা হচ্ছে। মামলার ত'দ'ন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত শুক্রবার রকিবের ফ্ল্যাট থেকে তার স্ত্রী মুন্নি রহমান ও দুই সন্তানের লা'শ উ'দ্ধা'র করে পুলিশ। নিহ'ত মুন্নি রহমানের ভাই ও এ ঘটনায় হ'ত্যা মা'মলার বা'দী মুন্না রহমান গতকাল রবিবার রাতে বলেন, ''আমার বোন ও ভাগ্নে-ভাগ্নির লা'শ উ'দ্ধারের পর তাদের বাসা থেকে আমরা একটি নোটবুক উ'দ্ধার করে পুলিশকে দিয়েছি। নোটবুকটি রকিবের।''
তিনি বলেন, ''নোটবুকে সে এসব কথার পাশাপাশি তার ঋ'ণগ্র'স্ত হওয়াসহ জীবনের অনেক ক'ঠিন কথা লিখে রেখেছে। পুলিশ নোটবুকে পাওয়া ফোন নম্বরটি ঘেঁটে দেখতে পায়, সেটি তাদের (রকিব) বাড়িওয়ালীর। পরে পুলিশ এ বিষয়ে আমাদের সামনেই বাড়িওয়ালীকে জি'জ্ঞা'সাবাদ করেছে। এখন আমরা এ ঘটনার নে'পথ্যে রকিবের বাড়িওয়ালীকেও স'ন্দেহ করছি। রকিব এখানে ডাইনি বলতে বাড়িওয়ালীকে বুঝিয়েছেন।
মুন্না বলেন, ''স্ত্রী-সন্তানের মৃ'ত্যুর আগে বাড়িওয়ালী সম্পর্কে এ ধরনের কথা বলেছিল রকিব। তখন আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিইনি। এ নিয়ে রকিবকে আমরা চা'প দিলে সে বলেছিল, 'সত্য কথা বললে ওই ডাইনি আমার স্ত্রী-সন্তানকে মেরে ফেলবে।' এখন মনে হচ্ছে বাড়িওয়ালীর সঙ্গে রকিবের কোনো ঝা'মেলা আছে। এখন নি'খোঁ'জ রকিবকে পাওয়া গেলেই ঘটনার র'হ'স্য জট খুলবে।''
তিনি আরো বলেন, ''বাড়িটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় মো'ড়ানো। অথচ ঘটনার পর ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে স'ন্দেহ দেখা দিয়েছে। পুলিশ ফুটেজ জ'ব্দ করে এখনো কোনো তথ্য পায়নি।'' রকিবের স্বজন ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, অনলাইনে মুদ্রা কেনাবেচাসহ বিভিন্ন গো'পনীয় ব্যবসার চ'ক্রে পড়েছিলেন রকিব। ওই ব্যবসায় মোটা অঙ্কের টাকা ধ'রা খেয়েছিলেন তিনি। এতে তিনি ঋ'ণগ্র'স্ত হয়ে বনানী ও উত্তরার বিভিন্ন সহকর্মীর কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা ধা'র নেন। কয়েকজন স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেরত দেননি।
এদিকে এ হ'ত্যার ঘটনায় রকিব উদ্দিন আহম্মেদকেই আ'সামি করে গত শনিবার রাতে দক্ষিণখান থানায় হ'ত্যা মামলা করেছেন নিহ'ত মুন্নির ভাই মুন্না রহমান। তিনি এজা'হারে বলেছেন, রকিব এক কোটি টাকার মতো ঋ'ণগ্র'স্ত। পাওনাদাররা তাকে খুঁ'জছেন। তবে এই টাকার জন্যই রকিব দুই সন্তান ও স্ত্রীকে হ'ত্যা করেছেন কি না এ বিষয়ে এজাহারে কিছু বলা হয়নি। সূত্র : কালের কণ্ঠ