নিউজ ডেস্ক : শেফালি বেগম। পেশায় একজন নার্স। মাত্র বছর চারেক আগেই চাকরিজীবন শুরু করেছেন। স্বামী মো. রাসেল খান কলাবাগান এলাকার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। অর্থবিত্তের মালিক নন এ দম্পতি। তবে মনটা তাদের অনেক বড়। আর তাইতো বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে রাস্তাঘাটে অসহায় হতদরিদ্র মানুষদের জন্য একবেলার খাবার নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন।
ভুনাখিচুড়ি আর মুরগির মাংস রান্না করে প্যাকেট করে আজ (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলাবাগান, ধানমন্ডি ও বসুন্ধরা এলাকার পাঁচ শতাধিক অসহায় দরিদ্র নারী, পুরুষ ও শিশুদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন।
একবেলা খাবার খাইয়ে নাম কামানো তার উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য তাকে দেখে যেন সারাদেশে কর্মরত তার সহকর্মী নার্সরা একবেলার খাবার নিয়ে অসহায় লোকগুলোর পাশে এসে দাঁড়ান।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শেফালি বেগম জানান, ২০১৬ সালে তিনি সরকারি চাকরিতে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বহির্বিভাগে কর্মরত আছেন। গত কয়েকদিনে মিডিয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় মানুষগুলোর খাবারের জন্য হা'হাকার দেখে তার মনটা কেঁ'দে ওঠে।
এরপর তিনি তার স্বামীর সাথে এদের সাহায্য করার ব্যাপারে আলোচনা করেন। নিজের বেতনের টাকা থেকে কিছু সঞ্চয়ও রয়েছে বলে জানান। এ ব্যাপারে আর দ্বিমত করেননি তার স্বামী রাসেল।
চাকরি করে রান্না করার সময় করতে না পারায় স্বামীর হাতে তুলে দেন সঞ্চয়ের হাজার বিশেক টাকা। তার স্বামী বাজার সদাই করে বাবুর্চিকে দিয়ে রান্না করান। তার স্বামীও কিছু টাকা যোগ করে ভুনাখিচুড়ি ও মুরগির মাংস রান্না করিয়ে সেগুলো প্যাকেট করান।
শেফালি বেগম বলেন, আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা শহর কার্যত একপ্রকার লকডাউন। এ সময় সমাজের বিত্তবানসহ সহকর্মী নার্সরা এগিয়ে এলে দরিদ্র মানুষগুলো অভুক্ত থাকবে না।
স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ (স্বানাপ) মহাসচিব ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, আমাদের একজন নার্স অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তাকে নিয়ে আমরা নার্স সমাজ গর্বিত। তার মতো অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি নার্স সমাজের প্রতি আহবান জানান।