নিউজ ডেস্ক : করোনাভাইরাস সং'ক্রমণ প্র'তিরোধ ও আত'ঙ্কে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশের সবকটি ফটক তালাবদ্ধ রয়েছে। উদ্যানে নিরাপত্তারক্ষীরা ছাড়া বহিরাগত সবার প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসে ইতোপূর্বে উদ্যানটিতে এত দীর্ঘসময় মানুষের পদচারণা পড়েনি, এমন নজির নেই। স্বাভাবিক সময়ে কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এ উদ্যানটি মুখরিত থাকত। বিশাল উদ্যানজুড়ে খোলা মাঠ ও নাম জানা-অজানা শতশত গাছপালার ছায়ায় বসে গল্প, বিশ্রাম, খোলা জায়গায় খেলাধুলা করতেন অনেকেই। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে উদ্যানজুড়ে কেবল শূন্যতা ও সুনসান নীরবতা।
সরেজমিন দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের সং'ক্রমণে লাখো লাখো মানুষ ঘরব'ন্দি থাকায় গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ভিন্নরূপে সেজেছে। উদ্যান যেন সবুজ গালিচায় পরিণত হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই সবুজ সতেজ ঘাস। দীর্ঘসময় ঘাস না কাটায় উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে ঘাস বড় হয়ে ধান ক্ষেতের মতো দেখা যায়। ছোট বড় অসংখ্য গাছ সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে। বিভিন্ন গাছে নানান রঙের ফুলের ছড়াছড়ি। মানুষজনের উপস্থিতি না থাকায় গাছে গাছে কোকিল ও দোয়েলসহ বিভিন্ন পাখির কলরব শোনা যায়।
উদ্যানের বিভিন্ন পথে মানুষের পদচারণা না পড়ায় কাঠবিড়ালিদের ফুরুত-ফারুত করে এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। উদ্যানের গ্লাস টাওয়ার সংলগ্ন লেকের পানিও এখন আগের চেয়ে অনেক পরিষ্কার ও টলটলে।
স্বাভাবিক সময়ে সকাল-সন্ধ্যা উদ্যানের ভেতর মন্দিরে ভক্তরা পূঁজা করতে গেলেও এখন করোনা সং'ক্রমণের আশ'ঙ্কায় উদ্যানে প্রবেশ নি'ষেধ থাকায় মন্দিরে আগের সেই প্রাণচঞ্চলতা নেই।
দুই মাসেরও বেশি সময় পরে সাধারণ ছুটি শেষে এখন সরকারি ও বেসরকারি অফিস খুলেছে। চালু হয়েছে গণপরিবহন। গত দুদিন যাবত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণকারীরা আসতে শুরু করেছেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাধিক নিরাপত্তাকর্মী জানান, দাফতরিকভাবে তাদের এখনও উদ্যানে কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে উদ্যানের নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণে যারা আসেন তারা সীমানা প্রাচীর টপকে ভেতরে ব্যায়াম ও হাঁটাচলা করতে আসতে শুরু করেছেন। তারা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরে আসছেন। তাদের কিছু না বললেও উদ্যানের ভেতর সাধারণ মানুষকে ঘুরতে আসতে দিচ্ছেন না নিরাপত্তারক্ষীরা।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনা'ক্ত হয়। ক্র'মান্বয়ে সং'ক্রমণ ছ'ড়িয়ে পড়তে থাকায় গত ২৪ মার্চ থেকে উদ্যানে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়।-জাগো নিউজ