রাতে আবারো হাইকোর্ট বসলেন। এবার বিমান চালক মরহুম মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে আজ রাতের মধ্যে রাজধানীর গুলশানে তাদের পৈত্রিক বাড়িতে তুলে দিতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে(ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় এ আদেশ দেন। আদেশে দুই বোনকে পুলিশ প্রহরায় পৈত্রিক বাড়িতে (গুলশান ২ নম্বরে ৯৫ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়ী) প্রবেশের ব্যবস্থা নিতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এ আদেশের তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। দুই বোন বাড়িতে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা-এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশে আগামী পহেলা নভেম্বর পর্যন্ত ওই বাড়ীর সামনে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করে দুই বোনের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী পহেলা নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় দুই বোন মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফা এবং মরহুম মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের স্ত্রী দাবিকারী আঞ্জু কাপুরকে নিয়ে গুলশান থানার ওসিকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে আদালতের আদেশ প্রতিপালনের বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আদালতের এই আদেশের তথ্য গতকাল রাতেই গুলশান থানার ওসিকে টেলিফোনে অবহিত করেন সুপ্রিম কোর্টের ওই কর্মকর্তা।
জানা যায়, সংগীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ গত ১০ অক্টোবর মারা যান। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হয় ২০০৫ সালে। তাদের দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফা। এদের মধ্যে বড় মুশফিকা মোস্তফা লেখাপড়ার জন্য ২০১৩ সালে দেশ ছাড়েন। আর ছোট বোন মোবাশ্বেরা মোস্তফা বিয়ের পর আমেরিকা চলে যান। ফলে মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ একা হয়ে পড়েন। এ সময় তার সঙ্গে ভারতের বেঙ্গালুরের মেয়ে আঞ্জু কাপুরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সুত্র ধরে ২০১৩ সালে তাদের বিয়ে হয় বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওয়াজি উল্লাহ।
মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফার অভিযোগ তারা গত শনিবার সকাল থেকে বাড়ি সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু তাদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা অনেকবার বাড়িতে ঢুকতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
এর আগে রাতে হাইকোর্ট বসে ধানমন্ডিতে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কে এস নবীর দুই পৌত্রকে বাড়িতে তুলে দিতে নির্দেশ দেন এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জের চার শিশুকে জামিন দেন।