রাজু আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ : মুখরোচক খাবার ঝালমুড়ি কে না পছন্দ করেন। সেই পছন্দের মাত্রা যদি হয় চলন্ত ট্রেন থামিয়ে ঝালমুড়ি কেনা তবে তা বলাই বাহুল্য। উপরন্তু সেই ঝালমুড়ির ক্রেতা যদি হন খোদ ট্রেনের চালক তবে সেটি বাড়াবাড়ির পর্যায়েই পরে বৈকি।
আর এমনই অদ্ভুত ঘটনা ঘটিয়েছেন ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রুটের চলাচলকারী এক ট্রেন চালক। সোমবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়।
তবে মঙ্গলবার সেই ট্রেনের চালক কে ছিলেন সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে চাননি নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের কোনো কর্মকর্তাই। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও তে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রেন থামিয়ে ট্রেনের চালক শহরের অদূরে উকিলপাড়া এলাকার রেল লাইনের পাশে বসা এক নারী বিক্রেতার কাছ থেকে ঝালমুড়ি সংগ্রহ করছেন।
ভিডিও ধারণ করা ব্যক্তি ওই এলাকার দিপ্ত সাহা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, বিষয়টা প্রায় ৫-৬ দিন খেয়াল করেছি। প্রায়শই সন্ধ্যায় বা রাতে ঢাকাগামী বা ঢাকা থেকে আসা ট্রেনটি এই এলাকায় স্লো হয়ে থেমে যায়। সোমবার ভিডিও ধারণ করেছি।
নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশনের সদ্য অবসরে যাওয়া স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, ‘নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি ট্রেন ৪০ মিনিটের মধ্যে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ পৌঁছানোর কথা। সেখানে কখনো কখনো ৫০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে।’
ব্রিটিশ, এরপর পাকিস্তান আমলের বিখ্যাত ও প্রাচীনতম রেল লাইনগুলোর মধ্যে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ রেল পথটি অন্যতম। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৫টি ট্রেন দিনে ৩০ বার এই রোডে ৩০ হাজারের বেশি যাত্রী আসা যাওয়া করে। অথচ, লক্কড়ঝক্কড় বগিতে সিট ছেঁড়া, জানালাগুলোও ভাঙা। অনেক বগিতে লাইট-ফ্যান নেই। খুব স্বল্প গতিতে চলছে ট্রেন।
তারপরেও অন্যান্য পরিবহন থেকে ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষগুলোর ভরসা ট্রেন পথটি। তাই তো দাঁড়িয়ে-বসে, গাদাগাদি করে ভ্রমণ করেন নারায়ণগঞ্জের মানুষ। এমনও হতে পারে ২নং রেল গেটের সিগন্যাল দিতে বিলম্ব হওয়ায় উকিলপাড়া এলাকায় ট্রেন থামিয়ে দিতে হয়।
ঝালমুড়ি কেনার ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ স্টেশনের মাস্টার কামরুল ইসলাম বলেন, আমি এখনও এমন কোনো ভিডিও দেখিনি বা অভিযোগ পাইনি। যদি ট্রেন থামিয়ে ঝালমুড়ি খেয়ে থাকে, তাহলে খুব খারাপ কাজ করেছে। আমি খবর নিচ্ছি, কে করেছে। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।-যুগান্তর