নিউজ ডেস্ক : ওমান প্রবাসী যুবক জিহান ছুটিতে দেশে এসে বিয়ে করেন। বিয়ের দেড় মাস না যেতেই সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে আবার ওমানে পাড়ি জমান। এর ফলে স্ত্রী চলে যান তার বাবার বাড়িতে। দীর্ঘ দেড় বছর পরে জিহান দেশে ফিরতে চাইলে আপত্তি জানান স্ত্রী। এক সময় স্বামীর ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেন। পরে প্রেমিক সেজে ‘রাজা’ নামে প্রেমে মেতে ওঠেন স্বামী (জিহান)। এভাবে মুঠোফোনে শুরু হয় প্রেম।
কাউকে না জানিয়ে দেশে ফিরে আদালতে স্ত্রীসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন জিহান। এর পরে র্যাবের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরব-কুলিয়ারচর মিলন সেতু এলাকা থেকে স্ত্রীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন ‘প্রেমিক রাজা’ নামের প্রবাসী স্বামী। গেল মঙ্গলবার বিকেলে (২ ডিসেম্বর) দেখা করতে আসা প্রেমিকা স্ত্রীকে ধরে ফেলে প্রেমিক (স্বামী)। এসময় দুজনের ধস্তাধস্তি ও টানা হেঁচড়ার সময় লোকজন জড়ো হয়। স্বামী-স্ত্রীর এই ঘটনাটি কেউ মুঠোফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করলে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার মণিপুর গ্রামের জিহান মিয়া একই উপজেলার আয়েশা বেগমকে বিয়ে করেন। গেল ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের মাত্র দেড় মাস পরে সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে জিহান পাড়ি জমান ওমানে। ফলে আয়েশা স্বামীর বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়।
এ সুবাদে প্রথমে ৮০ হাজার এবং পরে আরও ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ধার নেয়। এরপর থেকে জিহানের সাথে তার স্ত্রীর অমিল দেখা দেয়। দীর্ঘ দেড় বছর পরে দেশে ফিরতে চাইলে আপত্তি জানান স্ত্রী। ফলে এক সময় স্বামীর ফোন রিসিভ করাও বন্ধ করে দেন।
এ প্রসঙ্গে জিহান জানান, তার বাবা মায়ের আশকারা পেয়ে পরকীয়ায় মেতে ওঠে আয়েশা। পরে নিজের পরিচয় গোপন করে প্রেমিক সেজে ‘রাজা’ নামে আয়েশার সাথে প্রেম শুরু করি। প্রেমের সুবাদে ইমুতে সে নানা আপত্তিকর ছবি পাঠায়। তার বাবা ব্যবসার কারণে পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করে। কিন্তু সে তার নানার বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আছে বলে জানায়।
এরই মধ্যে একদিন রাজাকে আয়েশা জানায়, তার আগে বিয়ে হয়েছিল। তাকে সে ডিভোর্স দিবে এবং রাজাকেই বিয়ে করবে। কথাটি শোনার পর থেকে মনে অনেক আঘাত পায়। পরে গেল ২৮ নভেম্বর কাউকে না জানিয়ে দেশে ফিরে আসে।
এর একদিন পর কুমিল্লা আদালতে স্ত্রীসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে জিহান। পরে র্যাবের পরামর্শ নিয়ে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর সেতুর প্রান্ত ভৈরবের মানিকদী এলাকা থেকে আমার স্ত্রীকে হাতেনাতে ধরে ফেলি। তাকে নিয়ে ভৈরব র্যাব ক্যাম্পে গেলে আয়েশা ও আমার পরিবারের লোকজন মিলে মীমাংসা করে দেয়। জীবনের আর এমন হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয় আয়েশা। পরে তাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ভাইরাল হওয়া প্রসঙ্গে জিহান বলেন, আসলে এমন হবে কোনোদিন ভাবিনি। দেরিতে হলেও আমার স্ত্রী তার ভুল বুঝতে পেরেছে। আমরা পেছনের সব ভুলে সংসারে সুখী হতে চাই। তাই সবার প্রতি অনুরোধ যারা এই ভিডিওটি ফেসবুকে দিয়েছেন তারা ডিলিট করে দেবেন।